রাশিয়া বিশ্বকাপে যেরকম উত্থান–পতন হচ্ছে, তাতে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন বাছার কাজ খুবই কঠিন। জার্মানি, পর্তুগাল, আর্জেন্টিনা, স্পেনের মতো বড় দল ছিটকে যাওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, এবারের বিশ্বকাপটা কি তা হলে অঘটনের বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে? এরকম প্রশ্ন মনের মধ্যে খচখচ করছিল। ঠিক তখনই সারা বিশ্ব নড়ে উঠল সাম্বা–ঝড়ে। আর সাম্বা–ঝড় উঠলে, তা শেষ দেখে ছাড়বেই।
এবারের বিশ্বকাপে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন বাছতে গেলে, আমার মতে সেই তালিকায় প্রথম নামটা অবশ্যই ব্রাজিল। ব্রাজিল মানেই সাম্বা। ব্রাজিল মানেই আকর্ষণীয় ফুটবল। ব্রাজিল মানেই ছন্দময় ফুটবল। যা প্রাণে তোলে খুশির তুফান।
তাৎপর্যের হল, বেলজিয়ামও ইউরোপীয় ঘরানার মধ্যে থেকেই চেষ্টা করে আক্রমণাত্মক ফুটবলের। চেষ্টা করে ডাইরেক্ট ফুটবল খেলার। আজ রাত সাড়ে এগারটায় কাজান এরিনায় বিশ্বকাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল সেজন্যই উত্তেজক হতে চলেছে। কারণ, দুই দলই তুলতে চাইবে ঝড়।
ব্রাজিল মানে একা নেইমার নন। রয়েছেন কুটিনহো, উইলিয়ানরাও। তবে রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডারের ভূমিকায় কাজিমিরোর না থাকা সমস্যা হয়ে উঠতেই পারে। কাজিমিরোর পরিবর্তে নামতে পারেন ফের্নান্দিনহো। তাঁর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কারণ, এডেন অ্যাজার রোমেলু লুকাকু, কেভিন দে ব্রুইন, মারুয়ান ফেলাইনিরা যাতে মেজাজে না থাকে, তা দেখার দায়িত্ব ফের্নান্দিনহোরই।
বেলজিয়াম শিবির আবার হুমকি দিয়েছে যে কোয়ার্টার ফাইনালে নামার জন্য দল তৈরি। ফুটবলাররা ছটফট করছেন অধীর আগ্রহে। কোথাও থাকছে বার্তা যে ব্রাজিলকে ফেরত পাঠানোর জন্য দল প্রস্তুত। যে ভাবে জাপানের বিরুদ্ধে দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন অ্যাজাররা, সেই আত্মবিশ্বাসই এতে প্রতিফলিত।
ব্রাজিল ও প্রস্তুত। নেইমার ছন্দে ফিরেছেন। গোলও করছেন। পিছন থেকে দলকে খেলাচ্ছেন কুটিনহো। ব্রাজিলের রক্ষণকে বলা হচ্ছে প্রচণ্ড শক্তিশালী। রাশিয়া বিশ্বকাপ জুড়ে থিয়াগো সিলভা, মিরান্ডারা ভরসা জুগিয়েছেন দলকে। এই ম্যাচেও তেমনই প্রত্যাশা। বেলজিয়াম দুই প্রান্ত থেকে প্রচুর ক্রস পাঠাতে পারে। তাই ব্রাজিলের দুই সাইড ব্যাক ফিলিপে লুইস ও পাগেনারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাঝমাঠেই হবে আসল লড়াই।
ব্রাজিলই অবশ্য ফেভারিট। পাঁচবারের বিশ্বজয়ীদের লক্ষ্য হেক্সা বা ষষ্ঠ খেতাব। অন্যদিকে, প্রতিযোগিতার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দল বলা হচ্ছে বেলজিয়ামকে। চার ম্যাচে রেড ডেভিলসরা করে ফেলেছে এক ডজন গোল। তাই লড়াই জমজমাট।