শফিকুল ইসলাম মতি: নরসিংদীতে আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চাপের মুখে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও শিল্পপতি আব্দুল কাদির মোল্লার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষকে স্ব পদে বহাল করলেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে আহত শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কলেজের বাসাইল ছাত্রাবাসের সামনে তিন শিক্ষার্থীকে কোপানো হয়। আহতদের মধ্যে একজনকে মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিন শিক্ষার্থী হলেন- তৌফিক (১৮), মহসিন মিয়ার ছেলে পলাশ (১৭) ও জুয়েল ভূইয়ার ছেলে রানা (১৯)।
আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের শিক্ষক ফারুক মিয়া জানান, সন্ধ্যায় তিন শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসে যাওয়ার পথে কিছু দুর্বৃত্ত অতর্কিত তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ওই তিনজনকে জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তিনজনকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে পলাশের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমি শিক্ষাথীদের সাথে আছি তাদের আন্ধোলনে যুক্তি আছে তাদের আন্দোলকে সমর্থন করি।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনের সময় কিছু বহিরাগত যুবক ছাত্রীদের ছবি তুলছিলো এবং ইভটিজিং করছিলো। এ কারণে বহিরাগতদের সঙ্গে ছাত্রদের কথা কাটাকাটি হয়। আমরা ধারণা করছি, ওই ঘটনার জের ধরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কতৃপক্ষের ৪ দিনের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষনা করে।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, আন্দোলনের সঙ্গে এ ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা যতটুকু জেনেছি তা ভিন্ন বিষয়। আহতদের সঙ্গে বাইরের ছেলেদের কিছু সমস্যা ছিল। এসবের জেরে এই ঘটনা।
উল্লেখ্য, কলেজের মালিকপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধা পদত্যাগ করেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নরসিংদী জেলা ট্রাকচালক সমিতির ট্রাকচালকরাও মহাসড়কে এলোমেলোভাবে ট্রাক রেখে বিক্ষোভ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য কলেজের অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধার অনুরোধে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান আমরা ৪ দিনের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষনা করেছি। তবে ১০ জন শিক্ষক পদত্যেগ করার কথা ঠিক না মুশিউর রহমান মৃধাসহ ৪ জন শিক্ষক পদত্যেগ করেছে। কলেজ কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষসহ ৪ জন শিক্ষক পদত্যেগ পত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিয়েছে। কলেজটিতে ৮০ জন শিক্ষক ও ২৩ শত শিক্ষাথী আছে।