পটুয়াখালী প্রতিনিধি: ২০০৪ সালের ২৫ এপ্রিল পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিধাখালী এলাকার সোহরাফ ফকিরের ছেলে শাহজাদা সাজুর সঙ্গে বিয়ে হয় সাজেদার। বর্তমানে তাদের সংসারে মুগ্ধ নামে সাত বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী কর্তৃক একাধিকবার নির্যাতিত হয় সাজেদা। দেশে থাকাকালীন সাজেদা রাজধানীর একটি থানায় অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।

সাজেদা বুলবুল বেসরকারি প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম পাস করেন। উচ্চ ডিগ্রির প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সাজেদার স্বামী শাহজাদা তাকে ফুসলিয়ে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে স্বামী শাহজাদা প্রতিষ্ঠিত হলেও স্ত্রীকে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ করে দেয়া হয়নি।

নিয়মিত নির্যাতন করা হতো সাজেদাক। এমনকি সপ্তাহে দুই-একদিন খাবার দেয়া হতো। এসব ঘটনা মোবাইল ফোনে সাজেদা তার বোন উপমাকে মাঝে মাঝে জানাত। পর্যায়ক্রমে স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের মাত্রা বাড়তেই থাকে। স্বামীর এ অন্যায়ের সায় দিত তার পরিবার।

উপমা আরও জানান, শাহজাদার নির্যাতন সইতে না পেরে এক আত্মীয়ের বাসায় পালিয়ে যায় সাজেদা। সেখানে ২-৩ দিন থাকার পর শাহজাদা তার কাছে ক্ষমা চেয়ে পুনরায় তাকে বাসায় নিয়ে আসেন। এরপর গত ৫ জুলাই মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরের বাসায় নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে। স্বামী শাহজাদা সাজেদাকে সাত টুকরো করে সেগুলো একটি লাগেজে ভরে জঙ্গলে ফেলে দেয়। সেখান থেকে মালয়েশিয়া পুলিশ লাগেজভর্তি লাশটি উদ্ধার করে। ঘটনার পরে এক নির্ভরযোগ্য লোকের মাধ্যমে খুনের কথা জানতে পারে নিহতের ভাই ফারুক ও পরিবার।

ফারুক জানান, আজ ৮ দিন হয়েছে আমার বোনের সাত টুকরো দেহটি আমাদের কাছে আসেনি।

মা মমতাজ বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে সাজেদা সবার ছোট। উচ্চতর পড়াশোনার প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে বিদেশে নেয়া হয়েছে। আজ আমার মেয়ে মারা গেছে কিন্তু ওর মরদেহটা পর্যন্ত দেখতে পাইনি।

এ বিষয়ে শাহজাদার বড় ভাই শহিদ ফকির বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর ১০ বছর ধরে শাহজাদার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমরা সবাই আলাদা। এ বিষয়ে আমি কিছু যানি না।

এখানে কমেন্ট করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *