চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে কর্ণফুলী উপজেলাধীন শিকলবাহা কলেজ বাজার-বাদামতলের এক কিঃ মিঃ সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
কলেজ বাজার এলাকা হতে মুল সড়কের প্রবেশ পথে পানি নামতেই যে ড্রেনেজ নালা তৈরী করা হয়েছে। তা কয়েকদিন যেতেই বিভিন্ন জায়গায় এভাবেই ধসে পড়েছে। অথচ ‘জুন ক্লোজিং’-এর নামে তড়িঘড়ি করে দেড় কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হচ্ছে যেন দেন ভাবে। এ পরিস্থিতিতে বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিকলবাহাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করার ফলেই রাস্তার কাজ শেষ হতে না হতেই ওই স্থানের নালার ওয়াল গুলো এভাবে ধসে পড়েছে।
তবে কাজ পাওয়া কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এস.কে ট্রেডার্স এর পক্ষে ঠিকাদার মো. শাহেদুল ইসলাম বলছেন, সড়কের পাশে তৈরী করা নালার ওয়াল গুলো ধসে পড়েছে মূলত বৃষ্টি ও বাজারের পানি নামার প্রভাবে। তবে অচিরেই ধসে যাওয়া নালার ওয়াল গুলো সংস্কার করে দেওয়া হবে।
তিনি আরো দাবি বলেন, এসব ওয়াল স্কিমে ২ফুট করার কথা থাকলেও তিন ফুট করে তৈরী করেছেন তাঁরা। কিন্তু নিচে পানি জমায় সিমেন্ট সরে গিয়ে দেওয়াল ধসে পড়েছে বলে ধারণা করেছেন তিনি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্ণফুলী উপজেলা অফিস সূত্রে জানা যায়, তাদের অধীনে শিকলবাহা কলেজ বাজার হইতে বাদামতল সংযোগ সড়ক পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়কটি আরসিসি ঢালাই করে আধুনিক সড়ক নির্মাণের জন্য গত তিন মাস আগে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দে দরপত্র অনুযায়ী কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসকে ট্রের্ডাস। ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদেরকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে শেষ করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
কিন্তু ঠিকাদার ওই সড়কের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় কয়েকদিনের বর্ষণের ফলে সড়কের পাশে নালা তৈরীর বিভিন্ন স্থানের দেওয়াল ফেটে ধসে পড়েছে। এ বিষয়ে এস.কে ট্রেডার্স এর সাথে যোগাযোগ করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা ও শিকলবাহা ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ওসমান জানান, সড়কে পুর্বে থাকা পুরাতন ইট না তুলে কোন রকমে ঘষা মাজা করে রাস্তার কাজ করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এমনকি তিনি জানান, কাজ শুরুর দিকে পাথর, সিমেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা নিয়ে অভিযোগ করছিলেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় উপজেলা নেতাদের কয়েকবার অবহিত করলেও জনগণের কথা কেউ শুনেননি ও ব্যবস্থা নেননি।
অভিযোগ রয়েছে, এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সাব ঠিকাদার দিয়ে চালাচ্ছে প্রকল্পের কাজ। ফলে অনিয়ম দূর্নীতির কথা উঠেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পগুলোতে সাব ঠিকাদাররা নিন্মমানের বালু ও নষ্ট পাথর এবং নাম মাত্র সিমেন্ট দিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ করছেন। কর্মযজ্ঞ এলাকায় খুজেঁ পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীকে। লেভেলিং শেষে মাটি মজবুতকরণ ছাড়াই নামমাত্র খোয়া (৩য় শ্রেণীর ইট) দিয়ে বসানোর কাজ চলছে।
জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে জানান, গত মঙ্গলবারে আমি পরিদর্শন করেছিলাম দেখলাম ওয়াল তুলছে। এখন যেহেতু পড়ে গিয়েছে সুতরাং নতুন করে আবার তুলে দেবেন।’