সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা সাকল্যে বেতন পেতেন প্রায় সাড়ে আট হাজার টাকা। নতুন পে স্কেলে তাঁদের বেতন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হলেও নিয়মিত অনক বিদ্যালয়গুলোতে উপস্থিত থাকে না শিক্ষকরা।
এর জন্য শিশুরা মান সম্মত শিক্ষা পাচ্ছে না। নরসিংদী জেলার চরাঞ্চল সহ গ্রাম এলাকার বিদ্যালয়গুলো গিয়ে দেখা যায় যে, সকাল ৯ টায় স্কুলে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তারা আসে ১১ থেকে ১২ টায়।
এতে করে শিশুরা বসে থেকে খেলা ধূলা করে প্রচন্ড রোদে ছাতা নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।
এখন চাকরির শুরুতেই একজন সহকারী শিক্ষক বেতন পান প্রায় ১৭ হাজার টাকা। নিজের ইউনিয়নেই কিংবা উপজেলার মধ্যেই অন্য কোনো স্কুলে নিয়োগ পান তাঁরা। এতে বেশির ভাগ শিক্ষক নিজের বাড়িতেই থাকার সুযোগ পান। বলতে গেলে বাড়িতে খেয়ে-পরেই চাকরি করতে পারেন তাঁরা।
শিক্ষার মান বাড়াতে তদারকির দায়িত্ব যাঁদের, সেই প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারাই জড়িয়ে পড়ছেন নানা অনিয়মে। পরিদর্শন ব্যবস্থাও নড়েবড়ে হয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের (এটিও) টাকা দিলে একজন শিক্ষকের নিয়মিত স্কুলে হাজিরা না দিলেও চলে। অনেক স্কুলের শিক্ষকরাই ভাগাভাগি করে চাকরি করছেন।
অনেক ক্ষেত্রে বহিরাগত কাউকে টাকা দিয়ে ক্লাসে পাঠাচ্ছেন তাঁরা। স্কুলের নির্দিষ্ট সময়সূচিও মানেন না অনেক শিক্ষক। শিক্ষা কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে পার পেয়ে যান তাঁরা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন রয়েছে, খেলার মাঠও আছে। অবকাঠামোও উন্নত। তা সত্ত্বেও সরকারি চাকুরেরাই তাঁদের সন্তানদের সরকারি প্রাথমিকে পড়ান না। এমনকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও তাঁদের সন্তানদের পড়াচ্ছেন কিন্ডারগার্টেনে।
নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘জাতীয়করণ করা বিদ্যালয় ও প্যানেল থেকে আসা শিক্ষকরা দক্ষতার দিক দিয়ে ঠিকমতো তাল মেলাতে পারছেন না, এটা ঠিক। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ জন্য পুরনো স্কুলের শিক্ষকদের নতুন স্কুলে দিয়ে কিছুটা চেষ্টা করে যাচ্ছে। এর পরও সব স্কুল এক কাতারে আসতে সময়ের প্রয়োজন। স্কুলগুলোতে মনিটরিংও ভালো নয়।