মো: শফিকুল ইসলাম নরসিংদী :
১৫ আগস্ট ২০১৯ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, নরসিংদীর কর্মসূচি  ১৫ আগস্ট সূর্যোদয় থেকে সূর্যান্ত পর্যন্ত সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন করা হয়। সকাল ৯ টায় সার্কিট হাউজ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত শোক র‌্যালী বের হয়। শোক র‌্যালীর নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন।

বিশাল শোক র‌্যালীতে জেলা প্রশাসন, সদর উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী, স্কাউট অংশগ্রহণ করে। সাড়ে ৯ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মোতালিব পাঠান সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর।

১০ টায় জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন প্রথমে রক্ত দিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এবং বিনামূল্যে মুক্তিযোদ্ধাদের মেডিকেল চেক আপ করা হয়। সাড়ে ১০ টায় শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জীবনী ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। মূল আলোচক ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মতিন ভূঞা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, প্রফেসর গোলাম মোস্তাফা মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব পাঠান। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।এ সময় স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক ড. এটিএম মাহবুবুল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুষমা সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট তানবীর মোহাম্মদ আজীম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচএম জামেরী হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ সৈয়দ উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমীরুল হক শামীম সহ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে ০১ থেকে ০৭ আগস্ট জেলা শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জেলা গণগ্রন্থাগার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো হামদ ও নাত, ক্বেরাত প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা এবং ০৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

বাদ জোহর সকল মসজিদে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধু কে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তারা একে একে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনেচ্ছা, বঙ্গবন্ধুর তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে। এছাড়া নির্মম ভাবে হত্যা করেন বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্ত। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠ জন।
এছাড়া জেলার রায়পুরা, শিবপুর, পলাশ, বেলাব, মনোহরদী উপজেলায় এবং নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস নানান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করেছে।

এখানে কমেন্ট করুন: