মো.শফিকুল ইসলাম(মতি)নিউজ সময়:নরসিংদীর মনোহরদীতে সিএমএম কোর্ট ঢাকার নামে জারিকৃত ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় চারদিন কারাবাস করেছেন আব্দুর রাশিদ নামের এক বৃদ্ধ। পরে আদালতে এই পরোয়ানা অসত্য প্রমাণিত হলে সোমবার নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। আব্দুর রাশিদ মনোহরদী উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের মৃত ছমির উদ্দিনের ছেলে।বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মো. আবু সাইদ সিদ্দিকী টিপু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।আব্দুর রাশিদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ মনোহরদী থানার তারাকান্দি গ্রামের আব্দুর রাশিদের বাড়িতে হাজির হন মনোহরদী থানার উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক।

এসময় কৃষক আব্দুর রাশিদের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে (সিএমএম কোর্ট) সাজার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করতে আসেন বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশের এমন অভিযোগে হতভম্ব হয়ে পড়েন বৃদ্ধ আব্দুর রাশিদ। এসময় পরিবারের সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে কোন মামলা না থাকা ও সাজার পরোয়ানার ঘটনাটি আরও নিশ্চিত হতে সময় দেয়ার অনুরোধ করলেও সে সুযোগ দেয়নি পুলিশ।

তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় রবিবার গ্রেপ্তারকৃত ওই বৃদ্ধের স্বজনেরা জেলার আইনজীবীদের পরামর্শে ঢাকার সিএমএম কোর্টের আইনজীবী আবু সাইদ সিদ্দিকী টিপুর মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কাগজ সিএমএম কোর্টে দাখিল করেন। এসময় আদালতে এ ধরনের মামলার (হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত) নথি না থাকা ও ওই পরোয়ানা ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

পরে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে সোমবার দুপুরে মুক্তি পান আব্দুর রাশিদ। বিনা অপরাধ ও মামলায় ওই বৃদ্ধের চারদিনের কারাবাসে বিস্মিত পরিবারের সদস্যরা।ভুক্তভোগী আব্দুর রাশিদের ছেলে মাজহারুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার বাবার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তিনি একজন নিরীহ বৃদ্ধ কৃষক। পুলিশ যাচাই না করে ভুয়া পরোয়ানা আমলে নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করার পর তিনি চারদিন কারাগারে ছিলেন। সোমবার তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

কোন জালিয়াত চক্র উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই হয়রানির ঘটিয়েছে। আমরা জড়িতদের চিহ্নিত করে এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।আইনজীবী মো. আবু সাইদ সিদ্দিকী টিপু জানান, যে স্মারক নম্বরে আব্দুর রাশিদের বিরুদ্ধে সাজা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল সেটা সংশ্লিষ্ট আদালতে খোঁজ করে সত্যতা পাওয়া যায়নি। যে কেউ পরোয়ানার কাগজপত্র বা অন্যান্য তথ্য কারসাজি বা জালিয়াতি করে হয়তো এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে আদালত তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করাই পুলিশের কাজ। তবে এক্ষেত্রে কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এখানে কমেন্ট করুন: