মো.শফিকুল ইসলাম মতি,নিউজ সময়:
নরসিংদীর মনোহরদীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের অভিযোগে ২২৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মন্জুর এলাহী, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুত, মনোহরদী উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুর রহমান দোলন, লিয়াকত হোসেন, ফোটন, এড. হান্নানসহ সহযোগী সংগঠনের ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং বাকিদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে মনোহরদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং- ১২(৮)২০২২, ধারা-৩৩২/৩৫৩/১৮৬/৪২৭ দ:বি:।
মামলার পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়াসহ দ্রব্য-মূল্য বৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশ গুলিতে ছাত্রনেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে রোববার সকালে মনোহরদী উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। উপজেলার হেতেমদী মোড় সংলগ্ন ইটভাটায় সমাবেশে নেতাকর্মীরা আসাকালে ও মিছিলে অংশগ্রহণ করায় তাদের উপর যৌথভাবে হামলা চালায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজন।
এদিকে হাফিজপুর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে হেতেমদীর দিকে আসাকালে মিছিলটি বাঘবের এলাকায় পৌঁছলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি-পেটাসহ টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এসময় পুলিশের রাবার বুলেটে গুলিবিদ্ধ ২৭ জনসহ ৩৫ নেতাকর্মী আহত হয়। এদের মধ্যে মনোহরদী পৌরসভা শ্রমিকদলের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর বাবুল আকন্দ, কাউন্সিলর শামসুন্নাহার, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান সোহাগ, রমজান তালুকদার, মনি, খোকন, নজরুল ইসলাম। অপরদিকে বিএনপি কর্মীদের ইটের আঘাতে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেজবাহ উদ্দিন, মনোহরদী থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন, পরিদর্শক জহিরুল আলমসহ ১০ পুলিশ আহত হন।
বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও মনোহরদী উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে রাবার বুলেট ছুঁড়ে। এতে ২৭ নেতা-কর্মীকে গুলিবিদ্ধ হয়। উল্টো এখন আমাদের নেতাকর্মীদের মামলা করেছে। এভাবে হামলা-মামলা করে আমাদের রাজপথ থেকে সরানো যাবে না। গণমানুষের কাছে তাদের অবস্থান বুঝতে পেরে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে সরকার।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিএনপি’র নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করার সময় বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। হামলায় জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেজবাহ উদ্দিনসহ ১০ পুলিশ আহত হন। তিনি আরো বলেন, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার অভিযোগে সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল ছাড়া মনোহরদী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুর রহমান দোলন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন হোসেন বিদ্যুৎসহ ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।