Share on Facebook
মো. হৃদয় খান: নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি মোবারক হোসেন ওরফে মোবার দেয়া তথ্যে দুটি পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। বুধবার ভোরে নরসিংদীর জেলা শহরের পশ্চিম ব্রাহ্মন্দী মহল্লায় মোবার শ্বশুরের বাসা থেকে এসব উদ্ধার করা হয়। এর আগে লোকমান হত্যার সাত বছর পর মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ডিওএইচএস এলাকার একটি বাসা থেকে আসামি মোফাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নরসিংদী ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, লোকমান হত্যা মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি মোবারক হোসেন ওরফে মোবা হত্যাকান্ডের এক সপ্তাহ আগে থেকে মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন। লোকমান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী ওই হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী তিনি। ২৫ অক্টোবর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে পলাতক ছিলেন। নরসিংদীতে তার একটি জমি বিক্রি করতে দেশে এসে আত্মগোপনে ছিলেন মোবারক। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর ডিওএইচএসের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার সহযোগী রেহানুল ইসলাম ভূঁইয়া লেলিনকেও আটক করা হয়। লেলিনও বিভিন্ন মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এদিকে মোবারককে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিচারের দাবিতে নিহত মেয়র লোকমান সমর্থকরা বুধবার সকালে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ১ নভেম্বর লোকমান হত্যার সপ্তমবার্ষিকী।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১ নভেম্বর পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই কামরুজ্জামান তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এর মধ্যে এক আসামি মোবারক হোসেন মোবা বিদেশে পলাতক ছিলেন। বাকি ১৩ জনের সবাই গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন। পুলিশ প্রায় দীর্ঘ আট মাস তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৪ জুন সালাউদ্দিনসহ এজাহারভুক্ত ১১ আসামিকে বাদ দিয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। এতে মামলার এজহারভুক্ত তিন নম্বর আসামি শহর আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন, এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি নরসিংদী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল মতিন সরকার, তার ছোট ভাই শহর যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম সরকারসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ২০১২ সালের ২৪ জুলাই নরসিংদীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদী কামরুজ্জামান। আদালত ২৫ জুলাই নারাজি আবেদন খারিজ করে অভিযোগপত্র বহাল রাখে। পরে ২৮ আগস্ট নারাজি আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আদালত ২ সেপ্টেম্বর সেই আবেদন গ্রহণ করে ৪ নভেম্বর শুনানি শেষে ফের নারাজি আবেদন খারিজ করে। এরপর উচ্চ আদালতে যান বাদী। তিনি ওই অভিযোগপত্র বাতিল করে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মাধ্যমে আবার তদন্তের দাবি জানিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকার্য স্থগিত রাখতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। আদালত বাদীর আবেদনটি আমলে নিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকার্য স্থগিত করে দেন।