Share on Facebook

মো. হৃদয় খান: নরসিংদীতে সম্পদের লোভে ফজলুল করিম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে শাবল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে পাষণ্ড ছেলে। আজ শুক্রবার (৯ নভেম্বর) সকালে শহরের চৌয়ালা নামক স্থানে এ নির্মম ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে মাসুম মিয়াকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ। নিহত ফজলুল করীম চৌয়ালা এলাকার লাল মাহমুদের ছেলে।

নিহতের স্বজনেরা জানায়, দীর্ঘদিন যাবত নিহত ফজলুল করিম চৌয়ালা মার্কেটে মুদি মালের ব্যবসা করে আসছেন। আর তা দিয়েই তিন ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে তার সংসার চলতো। গত প্রায় ৬ বছর আগে নিহতের প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেলে তিনি আবার বিয়ে করেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী নিয়ে ভালোভাবেই চলছিলো তার সংসার। কিন্তু তাতে বাধা দেয় নিহতের ছেলে মাসুম মিয়া। মাসুম চাইতেন তার বাবা ফজলুর করিম যেন তার সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা করে দেন। কিন্তু ফজলুর করিম তা করতে চাননি। এ নিয়ে মাসুম প্রায়ই তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হতো। এ নিয়ে পিতার সাথে গত প্রায় দেড় বছর আগে বাগবিতণ্ডা হলে মাসুম তার পিতার মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর অবস্থায় ফজলুল করিমের বাড়ির লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে আসলে ফজলুল করিম তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। সেখানে বেশ কিছুদিন থাকার পরে পরিবারের অনুরোধে তিনি তার ছেলেকে জেল থেকে বের করে আনেন। জেল থেকে বের হয়ে মাসুম আবার আগের রূপ ধারণ করেন। প্রায়ই তার সৎ মায়ের সাথে ঝগড়া করতেন। ঝগড়ার সময় মাসুম বেশ কয়েকবার বাবাকে খুন করার হুমকি দেন।

পরবর্তীতে গত প্রায় ১৫ দিন আগে ফজলুর করিমের শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে যান। তখন থেকে তিনি সেখানেই থাকতেন। কিন্তু ফোনে সব সময়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

ফজলুর করিম ছেলের ভয়ে প্রায় সময়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। কিন্তু আজ শুক্রবার দুপুরে তার মেয়ের জামাই বিদেশ থেকে আসার কথা ছিল। তাই তিনি মেয়ের জামাইকে আনতে যাবার জন্য তৈরি হতে সকালে বাড়িতে যান। কিন্তু তিনি যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে অটোতে উঠবেন ঠিক তখনই ছেলে মাসুম পেছন থেকে শাবল দিয়ে তার ঘাড়ে কোপ দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এর পর থেকেই মাসুম পলাতক।

নিহতের স্ত্রী স্বপ্না আক্তার বলেন, আমি বিয়ের পর থেকে এক দিনের জন্যও মাসুমের জন্য শান্তিতে সংসার করতে পারেনি। সে সব সময়ই সম্পদের জন্য আমার স্বামীকে চাপে রাখতো। কিন্তু সে নেশাগ্রস্থ। তাকে সম্পদ বাটোয়ারা করে দিলে সে তা নষ্ট করে ফেলবে। তাই আমার স্বামী তাকে সম্পদ বাটোয়ারা করে দিতে চাইতো না। সম্পদের লোভে পড়েই মাসুম আমার স্বামীকে হত্যা করেছে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, আমরা নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এখানে কমেন্ট করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *