নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের তুলাতুলী গ্রামে পরকিয়া প্রেমিক অন্যত্র বিয়ে করায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ সর্বশান্ত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী প্রেমিকা হেলেনা(৪২)’র বিরুদ্ধে।

স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়, দুবাই প্রবাসী আব্দুল লতিফের স্ত্রী হেলেনা বেগম (৪২) তিন সন্তানের জননী। প্রতিবেশী আবুল কালাম নামক এক যুবকের সাথে তার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে।

এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় কলহ লেগেই থাকত। হেলেনা ও আবুল কালামের পরকিয়ার কথা পাড়া-প্রতিবেশীরাও অবগত আছে। এ নিয়ে তারা নানামুখরোচক কথাবার্তাও বলে থাকে।

৪/৫ মাস পূর্বে আবুল কালামের পরিবার তাকে অন্যত্র বিবাহ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তখন থেকেই হেলেনা বেগম ফুঁসে উঠে। তখন থেকেই কালামকে হুমকি দিয়ে আসছিলো অন্যত্র বিয়ে করলে মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানিসহ নানাবিদ ক্ষয়ক্ষতি করবে। কালাম এ সব হুমকি-ধমকিকে উপেক্ষা করে গত বছরের অক্টোবর মাসে অন্যত্র বিয়ে করে।

এতে হেলেনা ক্ষুব্দ হয়ে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর রায়পুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। এ মামলায় আসামী করা হয় কালাম ও হেলেনার নিকটতম প্রতিবেশী হানিফাকে। হানিফা হেলেনার স্বামীর আপন চাচাত বড় ভাই। তার সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে হেলেনার। অর্থলোভী কূট-কৌশলী হেলেনা হয়রানীসহ সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীণ উদ্দেশ্যে মামলায় আসামী করে কালামসহ হানিফাকে।

এদিকে মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয় ২৬/১০/২০১৮ইং তারিখ রোজ শুক্রবার তুলাতুলী হাসপাতাল হইতে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসার পথে আবুল কালাম ও হানিফা মামলার বাদীনি হেলেনা বেগমের শ্লীলতাহানী ঘটায়। উক্ত মামলার ঘটনায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিসহ স্থানীয় ইউ.পি চেয়ারম্যান মাসুদ ভূইয়া অবগত হলে স্ব-উদ্যোগে সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা না পেয়ে বাদীনিকে আপোষের জন্য অনুরোধ জানায়। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মাসুদ ভূইয়া একটি প্রত্যয়ণ পত্র প্রদান করেন। উক্ত প্রত্যয়ণ পত্রে উল্লেখ করেন-বাদীনি হেলেনা বেগম একজন মিথ্যাবাদী, তাহার দায়েরকৃত অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। কালাম ও হানিফাকে হয়রানী করে নগদ অর্থ ও জমি আত্ম-সাতের লক্ষ্যে মামলাটি করা হয়েছে। মাসুদ চেয়ারম্যানের এই প্রতিবেদন দেখে অর্থলোভী কূট-কৌশলী হেলেনা বেগম আরো ক্ষিপ্ত হয় এবং বলে আমাকে টাকা ও জমি লিখে না দিলে আরও নতুন নতুন মামলা দিয়ে সর্বশান্ত করে দিব। এই কথা বলে গত ২৬/১১/২০১৮ইং তারিখে আদালতে ১টি মামলা দায়ের করে। যার নং- সি.আর মামলা নং-৪৪৯/২০১৮ইং স্মারক নং-১৭১, ধারাঃ ৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৭/৫০৬ দঃ বিঃ।

এই মামলায় মোঃ হানিফ, আবুল কালাম ও কালামের বড় ভাই ইব্রাহিমকে আসামী করা হয়। আদালতের আদেশ পেয়ে রায়পুরা থানা উপ-পরিদর্শক আরমান খান মামলাটি তদন্ত করেন। তিনি সরেজমিনে তদন্ত শেষে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে উল্লেখ করা হয় বাদীনি অভিযুক্তদের হয়রানী করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা, বানোয়াট ঘটনা সাজাইয়া তাহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। বাদীনি কোর্ট পিটিশনে মানিত কোন স্বাক্ষী ও ঘটনাস্থল এলাকার লোকজন এ ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জবানবন্দি প্রদান করতে পারেনি।

এই প্রতিবেদন দাখিলের পর বাদীনি স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব করেন। এতে ভূক্তভোগীরাও সম্মত হন। প্রস্তাব অনুযায়ী কালামের বড় ভাই হেলেনা বেগমের মনোনীত ব্যক্তির কাছে নগদ ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকা প্রদান করেন। উক্ত টাকা পেয়েও অর্থলোভী হেলেনা আসামীদের নিকট আরো ৭০ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা না দিলে আবারও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসাবেন বলে হুমকি দেয়। আসামীগন দিন মজুর হওয়ায় এত টাকা সংগ্রহ করতে দেরী হয়। এ সুযোগে হেলেনা ১৫ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে আরো ১টি অভিযোগ দাখিল করেন। এ অভিযোগের ঘটনা গোপন রেখে হেলেনা বেগম গত ৩ জানুয়ারী সন্ধ্যা ৭টায় কালামের বড় ভাই ইব্রাহিমের সাথে আপোষের কথা বলে এবং মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। দিন মজুর আসামীদের পক্ষে এত টাকা সংগ্রহ করা কিছুতেই সম্ভব নয়। বর্তমানে কূট-কৌশলী অর্থলোভী হেলেনার মিথ্যা মামলার জালে পড়ে ৩টি পরিবার আজ মানবেতর জীবন যাপন করছে।

কূট-কৌশলী অর্থলোভী হেলেনার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার বেড়াজাল থেকে অসহায় ৩টি পরিবার রক্ষার্থে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয় সচেতনমহলসহ এলাকাবাসী।

এখানে কমেন্ট করুন: