নরসিংদীর পলাশে নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে দুই পাষন্ড যুবক। মজা করার ছলে খোরশেদ আলম গাজী (৪৫) নামে এক মানসিক রোগীর শরীরে এসিড ঢেলে দেয় রাসেল (২২) ও বিজয় (২১) নামে ওই দুই যুবক।
এসিডে আক্রান্ত খোরশেদ আলমের শরীরের প্রায় ৩০ ভাগ জ্বলসে এখন হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এই অমানবিক ও বর্ররোচিত ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে পলাশ উপজেলার পণ্ডিপাড়া গ্রামের সাকুরঘাট এলাকায়। খোরশেদ আলম গাজী পণ্ডিতপাড়ার গাবতলী গ্রামের মৃত আব্দুল মুসলেউদ্দিনের ছেলে।
অপরদিকে, এসিড নিক্ষেপকারী রাসেল মিয়া ওই এলাকার জুলহাস মিয়ার ছেলে ও বিজয় মোশারফ হোসেনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে তারা দুই জনই পলাতক রয়েছে।
খোরশেদ আলমের মেয়ে উর্মি আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমার বাবা মানসিক রোগে ভুগছেন। মানসিক রোগে অক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি কোনো কাজকর্ম করেন না। মাঝে মধ্যে এলাকার বিভিন্ন চা স্টলে বসে সময় পার করতেন। শুক্রবার রাতে তিনি বাড়ির পাশে একটি চা স্টলে বসে ছিলেন। সেখানে এলাকার রাসেল ও বিজয় নামে দুই যুবক আমার বাবার সাথে দুষ্টামি করার ছলে ওনার শরীরে ব্যাটারির নির্গত গরম এসিড ঢেলে দেয়। একপর্যায়ে তিনি যন্ত্রণায় চিৎকার শুরু করলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আশেপাশের লোকজন আমাদের খবর দিলে আমরা ওনাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করি।
উর্মি আক্তার আরো জানান, এলাকার দুষ্ট ছেলেরা প্রায় সময়ই আমার বাবাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করত। অনেক সময় তার শরীরে ময়লা-আর্বজনাও ঢেলে দিত। কিন্তু এবার যে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটাবে তা কখনো ভাবিনি।
সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন খোরশেদ আলম। অপরিচিত লোক দেখলেই তিনি ভয়ে নিজেকে লুকিয়ে নিতে চাচ্ছেন। এমন অমানবিক ঘটনা দেখে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, একজন মানসিক রোগীর ওপর মানুষ এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে কি ভাবে?।
পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত সহকারী চিকিৎসক মোঃ মোস্তফা কামাল জানান, এসিডে খোরশেদ আলমের শরীরের প্রায় ৩০ ভাগ জ্বলসে গেছে। তাৎক্ষণিক মেডিকেলে নিয়ে আসায় বড় ধরণের কোন ক্ষতি হয়নি।
পলাশ থানার ওসি মকবুল হোসেন মোল্লা জানান, এসিড নিক্ষেপের বিষয়টি শুনে হাসপাতালে রোগীকে দেখতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তবে পরিবার থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।