স্টাফ রিপোর্টার: ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ভয়াবহ হামলায় নিহত জাকারিয়ার লাশ আনতে বুধবার রাতে নিউজিল্যান্ড গেছেন তার স্ত্রী রিনা আক্তার। রিনার হাতের মেহেদীর রঙ না মুছতেই বিয়ের ১৭ দিনের মাথায় বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন জাকারিয়া ভূইয়া। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে নববধূর সাজে সেজেছিলেন রিনা আক্তার (২০)। প্রায় আড়াই বছর পর এবারের রমজানের ঈদে বাড়ি আসার কথা ছিল জাকারিয়ার।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর স্বামীকে কাছে পাবার স্বপ্ন দেখছিলেন রিনা আক্তার। কিন্তু তার স্বপ্ন যেন স্বপ্নই থেকে গেল। জাকারিয়া বাড়ি আসছে, তবে কফিনে লাশ হয়ে।
গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে আল নূর মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন রিনা আক্তারের স্বামী জাকারিয়া ভূইয়া। রিনা আক্তার নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের সরকারচর গ্রামের আব্দুল আলীর মেয়ে। প্রায় আড়াই বছর আগে ওই ইউনিয়নের জয়পুরা গ্রামের আব্দুল বাতেন ভূইয়ার ছেলে জাকারিয়া ভূইয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় রিনা আক্তারের। বিয়ের ১৭ দিনের মাথায় জাকারিয়া কাজের উদ্দেশ্যে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে পাড়ি দেন। এর আগে জাকারিয়া দীর্ঘ আট বছর সিঙ্গাপুরে ওয়েল্ডার টেকনোশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জাকারিয়ার বাবা আব্দুল বাতেন ভূইয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, জাকারিয়া এবার রমজানের ঈদে এসে তার বউকে সঙ্গে নিয়ে নিউজিল্যান্ড যাওয়ার সব কাগজপএ তৈরি করেছিল। ভাগ্যের নিয়তি এমনই, বউমা নিউজিল্যান্ড গেলো ঠিকই, তবে আমার ছেলের লাশ আনতে।
বৃহস্পতিবার জাকারিয়ার গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, জাকারিয়ার বাবা-মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা শোকে স্তব্দ হয়ে আছেন। বারবার একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন ।
রিনা আক্তারের বাবা আব্দুল আলী বলেন, সংসার জীবনের শুরুতেই মেয়ের জীবনে এতো বড় ক্ষতি হয়ে যাবে তা কখনো ভাবিনি।