শফিকুল ইসলাম মতি: আপন বোনকে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন ও পাগল বানানোর পায়তারা করে পাষন্ড ভাই রনি পাল। নরসিংদীতে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর শহরের চামড়াব গ্রামে সম্পত্তি ভোগকরার জন্য ঘরে তালাবন্ধ করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে অমানসিক নির্যাতন ও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে রাখে রনি।

এ খবর এলাকায় জানাজানি হলে শনিবার (৮ জুন) নির্যাতিত কিশোরী স্মৃতি রাণী পাল (১৮) কে ঘরের তালা ভেঙ্গে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে স্মৃতিকে স্থানীয় উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে পুলিশ স্মৃতিকে উদ্ধার করার খবর শুনে পালিয়েছে অভিযুক্ত রনি পাল। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার আপন চাচা রিপন পালকে আটক করে পুলিশ। নির্যাতিত কিশোরীকে চিকিৎসা শেষে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানান পুলিশ।

স্মৃতি রাণী পাল জানায়, ঘোড়াশালের ভাগদী গ্রামের তার কাকার শ্যালক অপু পালের কাছে সব জমি বিক্রি করে ৪০ লাখ টাকা বায়না করে তার ভাই। এর প্রতিবাদ করলে তাকে একের পর এক অমানসিক নির্যাতন করে।

একপর্যায় স্মৃতি আইনের সহযোগিতা নিতে চাইলে তাকে বসত ঘরে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রাখা হয়। ঘরে তালাবন্ধ অবস্থায় ঠিক মতো খেতেও দিতনা কেউ বরং পানির সাথে কিছু মিশিয়ে দিত তা খেয়ে অচেতন হয়ে পরতো স্মৃতি।

তার পরিবার সূত্র জানায়, স্মৃতি রাণী পাল পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের রাবান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করে। তারপর ভাই রনি পাল তাকে আর কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়নি। প্রায় ৮ বছর আগে তার পিতা দেবেশ চন্দ্র পাল ও মাতা রাণী পাল বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের রেখে যাওয়া ১২০ শতক জমি ছেলে রনি পাল ও মেয়ে স্মৃতি রাণী পাল ভোগ করে আসছিলেন। এই সম্পত্তি রনি পাল একা ভোগ করতে তার বোনকে পাগল বানানো ও তিলে তিলে প্রাণনাশের চেষ্ঠা চালায় চালায়।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা জানান,শনিবার সকালে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। স্মৃতি রাণী পাল এই অবস্থায় থেকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এমতা অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে কিছুটা সুস্থ্য হলে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। এঘটনায় দোষী বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

কিশোরী নির্যাতিত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন, নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আহমেদ, পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সেয়দ জাবেদ হোসেন, পৌর মেয়র শরীফুল হক।

এখানে কমেন্ট করুন: