গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দা ইউনিয়নে অভাবের তাড়নায় তিনটি সন্তান বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি বাচ্চাকে ৫০ হাজার এবং অপর দুটি বাচ্চাকে ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজবাড়ি গ্রামের হাবিল মিয়া অভাবের তাড়নায় মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের সন্তানকে তুলে দেন এক বিত্তবান পরিবারের হাতে। পরে সন্তান বিক্রির টাকা দিয়ে কেনেন বসতভিটা।
এ বিষয়ে হাবিল মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি চলতে পারি না, গরিব মানুষ। জায়গা-জমি নাই। মানুষের জায়গায় থাকি, সেখানে থাকতেও দেয় না। বাচ্চাটাকে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে ভাতিজার কাছ থেকে বসতভিটার জায়গা কিনেছি।
অপরদিকে, একই উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর গ্রামের ভূমিহীন আশরাফুল ইসলাম অভাবের কারণে দুই মেয়ে সন্তানকে সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে অন্যের হাতে তুলে দেন।
এ বিষয়ে আশরাফুল বলেন, আমার দু’বার করে যমজ সন্তান হয়েছে। তাদের আমি পালতে পারিনি। অভাবের কারণে দুটো বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছি। একটাকে বিক্রি করে পেয়েছি ৫ হাজার টাকা, অন্যটি বিক্রি করে পেয়েছি ১৫ হাজার টাকা। এই টাকায় সংসারে অনেক উপকার হয়েছে আমার।
উত্তর ধর্মপুরের গ্রামবাসীর অভিযোগ, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুর্গম এলাকায় অভাবের সাগরে হাবুডুবু খাওয়া অনেক মানুষের পাশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বা সরকারি কেউ দাঁড়ান না। স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানরা টাকা ছাড়া কারো উপকার করেন না।
রাজবাড়ি গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, ভোটের সময় চেয়ারম্যান-মেম্বার ও এমপিরা আসেন ভোট চাওয়ার জন্য। কিন্তু ভোট শেষে কেউ আর খোঁজ নেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্মপুর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের আসনের এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারী বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতে দেশের উন্নয়ন নিয়ে বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু এসব মানুষের কাছে কখনো আসেন না, ভালো-মন্দের খোঁজ নেন না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধ-৫ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, পরিবার দুটিকে সার্বিক সহযোগিতা করব। তাদের অর্থনৈতিক সব সহযোগিতা করা হবে।