জিনের বাদশার সাত কলস গুপ্তধনের লোভে জমি ও গরু বিক্রির আড়াই লাখ খুইয়ে এখন সর্বস্বান্ত ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার উত্তর হরিহরপুর গ্রামের এক কৃষক। কথিত জিনের বাদশার বিকাশ অ্যাকাউন্টে তিনি ওই আড়াই লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। নিরাপত্তার ভয়ে প্রতারণার শিকার ওই কৃষক পরিবার আইনের আশ্রয় নেয়নি বলে বলে জানিয়েছে।
পরিবারটি জানায়, নিজেকে জিনের বাদশাহ পরিচয় দেয়ার পর ওই প্রতারক প্রথমে তাদের সঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে বলে। এরপর জানানো হয় তাদের ভাগ্যে স্বর্ণবোঝাই পাতিল আছে। কিছু নিয়ম মেনে চললে এসব পাওয়া যাবে। আর এতে তারা একবারে ধনী হয়ে যাবেন। বিনিময়ে প্রথমে মাদরাসা-মসজিদ তৈরির জন্য কিছু টাকা বিকাশ করতে বলে।
গত ১৬ মে রাত ১২টার দিকে এক প্রতারক কণ্ঠ বিকৃত করে সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের উত্তর হরিহরপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. বাবুর মোবাইলে ফোন দেয়।
প্রতারক ফোনে বলে, বগুড়ার শাহ সুলতান বলখী (র.) এর মাজারে গুপ্তধন আছে। এই গুপ্তধন পাইতে গেলে মাদরাসা ও মসজিদ তৈরি করতে হবে। এর নাম করে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক।
এর কয়েকদিন পর কথিত জিনের বাদশা আরও টাকা দাবি করে। টাকা দিলে পরিবারটিকে সাত কলস গুপ্তধন ও একটি সোনার মূর্তি পাওয়ার আশ্বাস দেয়। এভাবে ২২ মে আরও ২ লাখ হাতিয়ে নেয় প্রতারক।
পরদিন রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের বাস টার্মিনালঘেষা আদর্শ কলোনি সড়কে একটি নিদিষ্ট স্থানে স্বর্ণের আবরণে একটি পুতুল কৃষক পরিবারটিকে নিয়ে যেতে বলে প্রতারক। পুতুলটি ওই স্থান থেকে তুলে নিয়ে প্রথমে খুশি হলেও পরে দেখেন এটি অন্য কোনো ধাতুর তৈরি মূর্তি। এরপর থেকে জিনের বাদশার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবুও সন্দেহ মেটাতে পুতুলটি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে পরীক্ষা করে জানতে পারেন ওটা অন্য কোনো ধাতুর ওপর স্বর্ণের প্রলেপ দেয়া।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।