মো. হৃদয় খান: এবার নরসিংদী সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে ২৪০০ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭ শত ২৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হলেও, ফেল করেছে ৬৭৫ জন। জিপিএ -৫ পেয়েছে ২৪ জন। যা নিয়ে আলোচনা ও সামালোচনার ঝড় বইছে।
শিক্ষার্থীদের প্রানকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত নরসিংদী সরকারী কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিপর্যয়ের বিষয়টি নিয়ে সর্বত্রই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। যেখানে দেশ এগিয়ে চলেছে, সেখানে পরীক্ষার ফলাফল পিছিয়ে কেন- এ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে, যে যার মতো করছে মন্তব্য। কেউ মন্তব্য করছে, আমরা কি তাহলে শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছি? অনেকে আবার সৃজনশীল পদ্ধতিকে দায়ী করছেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের গাফিলতির অভিযোগও উঠেছে। আবার সমালোচনার ঠিক উল্টোদিকে অনেকের অবস্থান। তাদের মতে, পরীক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল সবসময় নাও পাওয়া যেতে পারে। জিপিএ-৫ অর্জন কমে যাওয়ার বিষয়টিকে তারা যেভাবে মূল্যায়ন করছেন তা হল- জিপিএ-৫ অর্জনই মূলকথা নয়, শিক্ষার্থীদের মৌলিক জ্ঞান অর্জনের বিষয়টিই মুখ্য।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারী কলেজের শিক্ষক জানায়, এটা কখনো কাম্য হতে পারে না, এ জন্য দায় কার? বিশ্বমানের শিক্ষার নামে একদিকে বাণিজ্য, অন্যদিকে কোচিং, গাইড বই, শিক্ষার্থীদের ওপর অমানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে সুশিক্ষা এবং প্রকৃত মানুষ গড়ার পরিবর্তে কেতাবি শিক্ষার পথে ঠেলে দেয়া হয়েছে পুরো শিক্ষা পরিবারকে। প্রত্যাশা ছিল শিক্ষার হার বৃদ্ধির সঙ্গে শিক্ষার মান বাড়ুক। মেধা যাচাইয়ে যদি পাসের হার কমে তাহলে আফসোস নেই। অসংখ্য নামমাত্র শিক্ষিত বেকার যুবকের চেয়ে অল্পসংখ্যক প্রকৃত মেধাবী বেশি দরকার। কারণ তারাই বাকিদের কাজের ক্ষেত্র তৈরিতে ভূমিকা রাখে। সৃজনশীল পদ্ধতির জটিলতার কারণে বছর দুয়েক আগেও গণিতের ফলাফল খারাপ হওয়ায় সার্বিক ফল একটু খারাপ হয়েছিল। এতে হৈচৈ পড়ে গিয়েছিল। বিষয়টা এমন যে, সবাইকে পাস করতে হবে। ফেল করা যেন মহাঅপরাধ। তাই প্রতি বছর ফল প্রকাশের পরপরই দেশে আত্মহননের খবর চোখে পড়ে। এটা অপ্রত্যাশিত।
এইচএসসিতে যারা অকৃতকার্য হয়েছেন তাদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা অকৃতকার্য হয়েছেন তারা নব উদ্যমে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে আগামী পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার চেষ্টা করবেন।