নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি:
নরসিংদী জেলাজুড়ে লোকজনের মধ্যে ডেঙ্গু আতংক বিরাজ করছে। গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে নরসিংদী জেলায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর কোন ঘটনা নেই। বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত নতুন করে কোন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা যায়নি। সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই পর্যন্ত নরসিংদীতে ২১ জন ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গবার (৩০ জুলাই) রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত নতুন করে কোন রোগী শনাক্ত হননি। দুটি সরকারী হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৭ জন। এর মধ্যে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ৪ জন ও নরসিংদী সদর হাসপাতালে ৩ জন। ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৭ জন। অন্যরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরেজমিনে নরসিংদীর ১ শ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, আক্রান্ত রোগীদের মশারীর মধ্যে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও মশক নিধন কার্যক্রম চালানো হয়েছে।

জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে কয়েল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে ডেঙ্গু শনাক্ত করার লজিস্টিক সাপোর্ট ও রিএজেন্টের অভাবে শুধু মাইক্রোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। হঠাৎ করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হওয়ায় নানা সংকটের মধ্যেও আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের অধিকাংশই ছাত্র এবং চাকরিজীবি। ঢাকায় লেখাপড়া অথবা চাকরি করেন এমন ব্যক্তিদেরই বেশী আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলা হওয়ায় আক্রান্তরা কোন না কোন ভাবে ঢাকা থেকে ডেঙ্গুর জীবানু বহন করে নিয়ে এসেছেন। আমরা বিপদজনক পর্যায়ে নেই। তবে সবরকম প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার সবচেয়ে বড় সরকারী দুটি হাসপাতাল নরসিংদী সদর ও ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্ত করার লজিস্টিক সাপোর্ট ও রিএজেন্ট নেই।

আক্রান্তরা এই দুটি হাসপাতালে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি ৫০০ টাকা হলেও কোন কোন ক্ষেত্রে ১৫০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ আছে। অনেক ক্ষেত্রে, এসব বেসরকারী চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকার নির্ধারিত ফি নেওয়ার কথা উঠলে স্টিপ না থাকার অজুহাতে পরীক্ষা করা হচ্ছে না। নরসিংদীর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ আমীরুল হক জানান, সার্বিকভাবে এখানকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি অন্যান্য জেলার তুলনায় কম। ২১ জন ছাড়া আর কোন ব্যক্তির ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর আমরা পাইনি। একটাও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যেত না, যদি নরসিংদী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা না হতো। আমাদের হাসপাতালগুলোতে দ্রুতই সব ধরনের রিএজেন্ট ও লজিস্টিক সাপোর্ট চলে আসার কথা রয়েছে।

এখানে কমেন্ট করুন: