জে.জাহেদ,চট্টগ্রাম ব্যুরো:
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বেশ দুরে নয়। মাত্র কয়েকমাস পরেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে কাংখিত নির্বাচন। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা- কর্ণফুলী) আসনে এখনো সম্ভাব্য বিএনপির প্রার্থীরা সরব নয়। দলীয় প্রোগামে সাংগঠনিকভাবে মাঠে সরব না হলেও এলাকার সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ঠিকেই সরব রয়েছেন বিএনপি।
নীরবে ভোটের মাঠে রয়েছেন বিএনপি ও জাতীয়পার্টির প্রার্থীরা। এদিকে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতেও আওয়ামী প্রার্থীরা সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন। তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও তুলে ধরছেন এসব অনুষ্ঠানে।
কিন্তু ২০১৬ সালের স্থানীয় সরকারের ইউপি নির্বাচনে বিএনপি কিছুটা সরব ছিল। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নীরব দেখা যাচ্ছে বিএনপিকে। সর্বশেষ বিএনপিকে এ আসনে মরিয়া হয়ে লড়াই করতে দেখা যায় চরপাথরঘাটা ইউপি নির্বাচনে। এরপর স্বরুপে তাদের আর দেখা মেলেনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও ।
এদিকে আনোয়ারাতে মনোনয়ন প্রত্যাশী নতুন কাউকে সভা-সমাবেশ ও মিটিং করতে দেখা গেলেও কর্ণফুলীতে দেখা নেই কারো। মাঝখানে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আব্বাসের নাম শোনা গিয়েছিল। কেন্দ্রের সঙ্গেও নাকি যোগাযোগ ছিল বেশ। কিন্তু এখন অনেকটা নীরব দেখা যাচ্ছে তাকেও। যদিও বিএনপির অনেকে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও।
তথ্যমতে, আসনটি মূলত বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। এ আসন হতে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সরোয়ার জামান নিজাম দুবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার মনোনয়নে আপন ভাই নৌ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার এডমিরাল সরোয়ার জাহান নিজামের নাম শোনা যাচ্ছে বিএনপি হতে।
যদিও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যতগুলো জাতীয় নির্বাচন হয়েছে, সবকটিতেই এ আসনে বেশির ভাগ জয়লাভ করেন বিএনপির প্রার্থীরা। আগামী নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান । যিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত। বিএনপি নির্বাচনে গেলে মোস্তাফিজের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত বলে সুত্র জানায়।
রহস্যজনক ভাবে বাঁশখালী আসনের এমপি,দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীও তাকে নিয়ে আনোয়ারা উপজেলায় অনুষ্ঠান করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে মোস্তাফিজের এক কাছের লোক জানান, আসনটি ছিল বিএনপির দুর্গ। বর্তমানে আওয়ামী লীগের অবস্থান কিছুটা ভালো। তবে আগামীতে বিএনপিকে জনগণের ভোটে হারানো কঠিন হবে। কেননা বিএনপি হতে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি তাদের হারানো আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে। যদিও এ আসনে বিএনপি-জামায়াতের কর্মকা- অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে। তবে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নীরবে প্রচার করছে বলে তাদের দাবি।
কর্ণফুলী আনোয়ারায় দলীয় কর্মসূচীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে সরব না থাকলেও সামাজিক অনুষ্ঠানে বিএনপিকে একত্রিত হতে দেখা যায়। এতে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সরোয়ার জামান নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ- সভাপতি এডভোকেট এসএম ফোরকান, যুগ্ন- সম্পাদক এহসান এ খান,জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আলহাজ্ব এসএম মামুন মিয়া ,চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক হাজী মোঃ ওসমান,বড়উঠান ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সাঃ সম্পাদক নুর আলম, এডভোকেট ফৌজলুর আমিন, থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব এম মঈন উদ্দিন, যুবদল,ছাত্রদল ও অংঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের দেখা যায়। এছাড়া রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাদের একত্রে পাওয়া যায়না।
স্থানীয় নেতারা বলেছেন, গত ওয়ান-ইলেভেনের অভিজ্ঞতা মাথায় নিয়ে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে তরুণদের প্রাধান্য দেয়া হতে পারে। দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করায় অনেকেই মনোনয়ন তালিকা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন মাঠে যারা সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
তরুণ নেতাদের মধ্যে মনোনয়ন তালিকায় এগিয়ে আছেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে দুঃসময়ে দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব যারা পালন করেছেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো কোন নির্বাচন হবেনা বলেও অনেকে মত প্রকাশ করেন অনেকে।
ভোটের হাওয়া বইছে আগে থেকেই। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শেষ পর্যন্ত নৌকা-ধানের শীঁষের টিকিট কারা পাচ্ছেন- এ নিয়ে চলছে কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
তবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রচারণায় না থাকলেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তৎপর রয়েছেন দলীয় মনোনয়ন পেতে।