মো: শফিকুল ইসলাম (মতি):
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালির আত্মপরিচয়ের সঠিক ইতিহাস সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্ধোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ক্ষণগণনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে নরসিংদী সার্কিট হাউজ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয় র্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র গিয়ে শেষ হয়।পরে নরসিংদীর সাংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরু, জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন,পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার দার, মুক্তি যোদ্ধা কমেন্ডার মোতালিব পাঠান, আইন জীবী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান নাজির(আরমান)নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মাখন দাস,সম্পাদক মাজাহারুল পাভেজ,নরসিংদী জেলা রিপোর্টর্স ইউনিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম(মতি) সহ কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে মাঠে মাননীয় প্রদানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার উদ্বোধনে হাজার হাজার লোক এক সাথে ভিডিওযোগে দর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ যাবৎকালের সর্ববৃহত্ পদক্ষেপ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যেন উদযাপিত হয় তারই উদ্যোগ আমরা হাতে নিয়েছি। মানুষ যেন সঠিক ইতিহাসটা জানতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয় এবং বাংলাদেশকে যেন আমরা সারা বিশ্বের কাছে মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে পারি। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মের শত বছর পূর্ণ হল। আর ঠিক পরের বছর ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদযাপন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
সে কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মুজিব বর্ষ ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে এবং একইসঙ্গে হত দরিদ্রের হার ১১ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আমাদের লক্ষ্য এটা আরো কমিয়ে আনা। হত দরিদ্র বলে এদেশে কিছু থাকবে না। মানুষের দুঃখ-কষ্ট বঙ্গবন্ধু সহ্য করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্চ মাসটা আমাদের জন্য খুবই অর্থবহ মাস। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিন। আবার ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। কাজেই ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বছরটাই আমরা মুজিব বর্ষ হিসেবে উদযাপন করবো। জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী যথাযথভাবে উদযাপন করাকে জাতীয় কর্তব্য হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে এ দেশের মানুষের জন্যই কষ্ট স্বীকার করে গেছেন জাতির পিতা। আর সেই কষ্টের ফসল হিসেবেই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, স্বাধীন জাতির মর্যাদা। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে জাতির পিতা দেখেছেন দারিদ্র্যের হাহাকার। বুভুক্ষু নর-নারীর কষ্ট।
মানুষ ওষুধ পায়নি, চিকিৎসা পায়নি, খাবার পায়নি, থাকার জায়গা নেই। মানুষের এই দুঃখ কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারেননি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তারই পদাংক অনুসরণ করে এদেশের কৃষক, শ্রমিক এবং মেহনতি মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার সুফলও মানুষ পেতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখের বিষয় একটা সময় ছিল, ভাষা আন্দোলনে তার (জাতির পিতার) অবদান একদমই মুছে ফেলা হচ্ছিল। মুক্তিযুদ্ধে তার যে অবদান সেটাও মুছে ফেলার একটা চেষ্টা করা হয়েছিল। ২১ বছর এদেশের মানুষ সত্য জানতেই পারেনি। তিনি বলেন, আসলে সত্যকে কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারে না। সত্য কখনও না কখনো উদ্ভাসিত হবেই আর তার স্থানটা সে করে নেবে। আজকে আমরা সেটার প্রমাণ পাচ্ছি। দেশ বাসি সকলকে বাংলা দেশের ইতিহাস জানার আহ্বান জানান তিনি।
প্রকাশক: শফিকুল ইসলাম মতি
সম্পাদক: মো. হৃদয় খান
নিউজ সময়