স্টাফ রিপোর্টার: বৌভাতের পর বিদায় দেয়া হয়েছিল হাসিমুখে, কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। কে জানত এমন ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে তাদের ভাগ্যে। মুহূর্তে বিয়েবাড়িতে নেমে এলো শোকের ছায়া। মঙ্গলবার নরসিংদীতে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে, বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ৩ শিশুসহ ৭ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৭ জন। আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ও তাদের মধ্যেগুরুতর অবস্থায় ১০ জনকে ঢাকায় নেওয়া হয়। হতাহতরা সবাই বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।
এ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বর-কনে এখন হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন। বিয়ে বাড়িতে বরের বৃদ্ধা মাকে বাকরুদ্ধ অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি কোনো কথা বলতে পারছেন না। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ষাটনল মালোপাড়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য ফুলচান বর্মন।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল মালোপাড়ার কৃষ্ণ বর্মনের ছেলে রাজিব বর্মন রাজু নরসিংদী থেকে নববধূ নিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিবপুরে সোনাইমুড়ি ইটাখোলায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
দুর্ঘটনায় বর রাজিব বর্মন রাজু (২৫) ও কনে রমা বর্মনসহ (২০) অন্তত ১৭ জন আহত হন। তারা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন। আহতদের প্রথমে নরসিংদী হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে সিলেটগামী মিতালী পরিবহনের একটি বাস শিবপুরের সোনাইমুড়িতে পৌঁছালে, চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা চাঁদপুরগামী একটি মাইক্রোবাসে সঙ্গে সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই ২ শিশুসহ ৩ জন নিহত হয়। আহত ১৪ জনকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আরো এক শিশুসহ আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়।
নরসিংদী ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি মো. হাফিজুর রহমান বলেন পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘাতক বাসকে আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক আছে। তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বাসের চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনার পরই সড়কে যান চলাচল বন্ধ যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এই ঘটনায় বর-কনে দুজনের গ্রামেই নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া।
বরপক্ষের স্বজন লক্ষণ বর্মণ জানান, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ষাটনল গ্রাম থেকে বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসটি নরসিংদীর রায়পুরার নবোয়ারচর গ্রামে এসেছিল। রাতে বিয়ে শেষে সকালে কনেসহ গাড়িটি ফিরে যাচ্ছিল। পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে উপজেলার সোনাইমুড়ি টিলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনা নিহত স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।