গাজীপুরের শ্রীপুরে সাংবাদিক পরিচয়ে খাবার হোটেলে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে এক ভুয়া সাংবাদিক ও তার চার সহযোগী আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ স্থানীয় জনতা। পুলিশ তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, আইডি কার্ড, ক্যামেরা ও মোবাইল জব্দ করেছে। শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার বিসমিল্লাহ বিরানি হাউজে সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার চরআলগী (বৈরাগীরচর) গ্রামের হযরত আলীর ছেলে মোস্তফা কামাল (৪০), তার সহযোগী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আজুগীরচালা গ্রামের বুলবুল হোসেনের ছেলে জাহিদ হাসান (১৯), বহেরারচালা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সাবিব্বর হোসেন (২০), বেলতলী গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (২০) এবং মাইক্রোবাসের চালক পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার মাদারসী বাজার এলাকার শাহাজাহন হাওলাদারের ছেলে মানিক হাওলাদার (৪৫)।

হোটেলের কর্মচারী সাগর খানসহ স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত ৮টায় এক ব্যক্তি খাবার হোটেলে প্রবেশ করে তাদের খাবারে ব্যাঙ পাওয়ার অভিযোগ তুলে হুমকি দিতে থাকে। এসময় সাংবাদিক পরিচয়ে আরো কয়েকজন হোটেলে প্রবেশ করে এবং দোকানের ভিডিও ধারণ করা শুরু করেন। এ চক্রান্তের মূলহোতা মোস্তফা কামাল এসময় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ভয় দেখিয়ে হোটেল মালিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।

হয়রানীর ভয়ে হোটেল মালিক ১০ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়। তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে জাহিদ এবং সাব্বির নামের দু’জনকে আটক করে। এসময় ঘটনার মুল হোতা মোস্তফা কামালসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আটককৃতদেও পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে আটককৃতদের ছাড়িয়ে আনতে থানায় যায় এ ঘটনার মূল হোতা মোস্তফা কামাল এবং তার অপর দুই সহযোগী সোহাগ ও মানিক। এসময় হোটেল কর্মচারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ তাদেরকেও আটক করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি শ্রীপুরসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় সাংবাদিক পরিচয়ে সংঘবদ্ধ কয়েকটি চক্র সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে আসছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। তারা নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, কারখানাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে আসছে। অযথা হয়রানির ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।

শ্রীপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মনিরুজ্জামান জানান, আটক মোস্তফা কামাল নিজেকে সিএনএন বাংলা টিভির ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, টাটা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি, সিবি টিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ক্রাইম বাংলা টিভির চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকে। তার কাছ থেকে সিএন এন বাংলা টিভি, ৭১ বাংলা টিভি, তারা টিভির পরিচয়পত্র উদ্ধার এবং তাদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি ক্যামেরা, একাধিক মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

বিসমিল্লাহ বিরানি হাউজের কর্মচারী সাগর খানের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।সুত্র: দৈনিক জনকষ্ঠ

এখানে কমেন্ট করুন: