মো.শফিকুল ইসলাম(মতি)নরসিংদী :নরসিংদীর মনোহরদীতে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি ইমাম হোসেন রিপনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। (২০ এপ্রিল) মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মনোহরদী সরকারি কলেজ মাঠে এই হামলার ঘটনা ঘটে।আহত ইমাম হোসেন রিপন মনোহরদী উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও মনোহরদী প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য।

আহত সাংবাদিকের স্বজনদের অভিযোগ, লকডাউনে অবৈধভাবে নদীর মাটি বিক্রি করছেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তার নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনা ঘটে।এদিকে ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। সাংবাদিক নির্যাতনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নরসিংদী ও মনোহরদী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।সাংবাদিক রিপনের বড়ভাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতিকুল ইসলাম মিলন সাংবাদিকদের জানান, চলমান লকডাউনের মধ্যে অবৈধভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মনোহরদী সরকারি কলেজের পেছনের একটি জমিতে মাটি ভরাট করেন যুবলীগ নেতা আতিক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক রিপনের সঙ্গে এক ড্রাম চালকের বাগবিতন্ডা হয়। এরই জের ধরে ইফতারের পর দুই যুবক আতিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য সাংবাদিক রিপনকে বাড়ি থেকে ডেকে কলেজে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ামাত্র আগে থেকে ওত পেঁতে থাকা ১৫ থেকে ২০ জনের একদল সন্ত্রাসী রিপনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন। ওইসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।হামলাকারীদের আঘাতে সাংবাদিক রিপন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে। তাকে প্রথমে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।স্থানীয়রা জানান, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খননে উত্তোলিত মাটি বিক্রি করতে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। তারা দিনরাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে মাটি বিক্রি করায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ধুলাবালুতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

ড্রাম ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।জানতে চাইলে অভিযুক্ত উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ইফতারের আগে আমার ট্রাকের চালক জানান, সাংবাদিক রিপন তাকে মারধর করেছেন। ইফতারের পর এই বিষয়ে কথা বলতে আমি কলেজ মাঠে গিয়ে দেখি পোলাপাইন রিপনকে মারধর করছে। আমি দৌড়ে ওনাকে বাঁচিয়েছি। তবে আমার কোন লোকজন তাকে মারধর করেনি।

স্থানী লোকজনের সাথে পূর্ব বিরোধের কারনে এই ঘটনা ঘটতে পারে গুরুতর কোন জখম হয়নি সামান্য আঘাত পেয়েছে। সাংবাদিকের ওপর হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, মাটির ট্রাক যাওয়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। আহতের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন আতিক ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে তাকে মারধর করেছেন। কিন্তু তারা এখনো থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম(মতি) বলেন, একের পর এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পুলিশ কোনো হামলাকারীকেই গ্রেফতার করেনি। আমরা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এখানে কমেন্ট করুন: