মো.শফিকুল ইসলাম(মতি)নিউজ সময়:নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৪৯ জনের লাশ নিয়ে আসা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে এসব লাশ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে নিয়ে আসা হয় বলে নিউজ সময়কে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ডেমরা স্টেশনের লিডার মোজাম্মেল হক।

পুলিশি পাহারায় আনা লাশগুলোর সব কটিই পোড়া।গতকাল বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ভবনে আগুন লাগে বিকেল পাঁচটার দিকে। ভবনটি ছয়তলা।এদিকে ঢাকা মেডিকেলে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন নয়জন। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মোরসালিন (২৮) নামের একজন। আর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বারেক (৪৮), নাহিদ (২৪), মঞ্জুরুল (২৮), আহাদ (৩৮), লিটন (৪৪)।এ ছাড়া এখনো চিকিৎসাধীন তিনজন হলেন হালিমা (১৩), মাজেদা (২৮) ও আমেনা (৪০)।হালিমার মা শাহানা নিউজ সময়কে জানিয়েছেন, চিকিৎসাধীন তিনজনই কাজ করছিলেন ভবনটির দোতলায়। সবাই ঘটনার সময় দোতলা থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন।তাঁদের সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন রায়হান আহমেদ, যিনি ওই কারখানায় কিউসি (কোয়ালিটি কন্ট্রোল) ল্যাবের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। তিনি নিউজ সময়কে বলেন, কারখানায় প্রবেশের আগেই ল্যাব।

কাজ করার সময় হঠাৎ চিৎকার শুনতে পান তিনি। এরপর বের হয়ে দেখেন, ঘন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন চারদিক।রায়হান আহমেদ বলেন, এর মধ্যে ওপর থেকে কয়েকজন লাফিয়ে পড়েন। কয়েকজন মিলে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে আনেন হাসপাতালে। তবে আগুন কীভাবে লেগেছে, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।হালিমার মা শাহানা বলেন, তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে। এর মধ্যে বড় মেয়ে সাদিয়া ও ছোট মেয়ে হালিমা একই কারখানায় কাজ করেন। গতকাল বিকেল চারটায় বড় মেয়ে সাদিয়া বের হওয়ার পরই ছোট মেয়ে হালিমা কাজে যোগ দেন।

তিনি বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই একজন ফোনে কল দিয়ে আগুন লাগার খবর জানান। এরপর তাঁরা রাতভর হালিমাকে খুঁজেছেন। অবশেষে না পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসেন। সেখানে তাঁর ছোট মেয়েকে অচেতন অবস্থায় পান, অচেতন এখনো। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন।শাহানা জানান, তাঁর দুই মেয়েই চার মাস ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করেন, বেতন পান প্রত্যেকে পাঁচ হাজার টাকা। শাহানা নিজেও একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। আর তাঁর স্বামী আলমগীর কাজ করেন আরেকটি কারখানায়। তাঁরা থাকেন রূপগঞ্জ শহরের গাউছিয়া এলাকায়।১৯ মাস আগে এই পরিবার নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ আসে জীবিকার সন্ধানে।

এখানে কমেন্ট করুন: