মো: শফিকুল ইসলাম মতি নিউজ সময়:নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই। স্ত্রীর নামে ঋণের চাপ থেকে মুক্তি, জুয়ার টাকা না থাকা ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে স্বামী। শনিবার গভীর রাতে ছুরিকাঘাত ও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে স্ত্রী সন্তান হত্যার পর পালিয়ে যান তিনি। পরদিন সকালে স্ত্রী সন্তানের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে প্রতিপক্ষের ওপর হত্যার দায় চাপানোর চেষ্টা করে স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ। মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এ তথ্য জানান পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, হত্যাকান্ডের পর পিবিআই এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে আটক স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ। সোমবার বিকেলে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রকিবুল হক এর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে মামলার একমাত্র আসামী নিহত গৃহবধুর স্বামী।
আসামীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি আরো বলেন, স্ত্রীর নামে প্রায় ১০লাখ টাকা ঋণ করে নিহত গৃহবধুর স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ। এই ঋণের চাপ থেকে মুক্তি পেতে, জুয়ার টাকা সংগ্রহে ও প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাইকে ফাঁসাতে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আসামী গিয়াস উদ্দিন। গত শনিবার গভীর রাতে ছুরিকাঘাত ও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে স্ত্রী রহিমা বেগমকে হত্যা করে পাষন্ড স্বামী। রাতে তার বাড়িতে অবস্থানের কথা বলে দেবে আশংকায় ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে সন্তানদেরকেও হত্যা শেষে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।
এ ঘটনায় স্বামী গিয়াস উদ্দিনের দেয়া তথ্য সন্দেহজনক ভেবে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে পিবিআই এর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে সে। আটকের পর তার দেয়া তথ্যমতে ওই গ্রামের গঙ্গাজলী বিল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও জঙ্গল থেকে রক্তমাখা ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার করা হয়। পিবিআই এর পুলিশ সুপার আরো জানান, আসামী গিয়াস উদ্দিন শেখ একজন পেশাদার জুয়ারি। তার হাতে জুয়ার টাকা না থাকলে মাথা ঠিক থাকে না। এছাড়া এক নারীর সাথে নিয়মিত কথা বলার তথ্যও তার ফোনে পাওয়া গেছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে এই হৃদয় বিদারক হত্যার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
হৃদয় বিদারক এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় রোববার রাতে বেলাব থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহত রহিমা বেগমের ভাই মোশাররফ হোসেন। ওই মামলায় গিয়াস উদ্দিন শেখকে একমাত্র আসামী করা হয়। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী শেষে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।