মো.শফিকুল ইসলাম মতি,নরসিংদী :নরসিংদী শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে গতকাল রবিবার(১জুন) দুপরে মজলিশপুর গ্রামের বাড়ীতে জানাজা নামাজ শেষে মা বাবার পাশ্বে পারিবারিক গোরুস্থানে দাফন করা হয়। হারুন অর রশিদ খান ছিলেন বীর মুক্তি যোদ্ধা জানাজা নামাজের আগে রাষ্টীয় মর্যাদায় প্রশাসনের গার্ড অব অর্নার দেওয়া হয়। বুধবার (৩১ মে) বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। জানাজা নামাজে অংশ গ্রহন করেন জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান,পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম,দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার সর্বস্তরের জনগন অংশ গ্রহন করেন।

হারুনুর রশিদ খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্ট্যার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়া শোক জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।নরসিংদী শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুম হারুনুর রশিদ খানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানের বাড়ির ড্রইং রুমে ডুকে মুখোশদারি ৩ সন্ত্রাসী পেছন থেকে তাকে লক্ষ্য করে পরপর ৩টি গুলি করে। এতে তিনি পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে সুস্থ হওয়ার পর তিনি ভারতে চিকিৎসা নেয়। ভারত থেকে ফেরার পর তিনি পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে ঢাকা এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিওতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সর্বশেষ তিনি কোমায় চলে যায়। এরই মধ্যে বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যায়।এদিকে হারুন খানের মৃত্যুর খবরে শোকে স্তব্দ হয়ে পড়েন শিবপুরের সর্বস্তরের জনগণ। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন হারুন খানের স্বজন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।গতকাল হারুন খান এর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিবপুর কলেজ গেইট এলাকায় দোকানপাট বাসষ্ট্যান্ড শ্রমিকলীগের বাস ট্রাকের সমিতি সহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেন হারুন সমর্থকরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এছাড়া হারুণ খানকে গুলি করে হত্যা চেষ্ঠার ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামী করে শিবপুর থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন গুলিবিদ্ধ চেয়ারম্যানের ছেলে আমিনুর রশিদ খাঁন তাপস। ওই ঘটনায় ৫জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান পুলিশ। শিবপুর উপজেলা আওয়ামীগের সাধারন সম্পাদক সামুল আলম ভ‚ইয়া রাখিল বলেন হারুন অর রশিদ খানকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রুপান্তরীত হবে।

মামলার কয়েকজন আসামী গ্রেফতার হয়েছে অনেকেই এখনো গ্রেফতার হয়নি, আবার অনেকেই আতœগোপনে দেশের বাহিরে আছে। আমরা খুনিদের বিচার চাই। হুরুন অর রশিদ খানের বড়ভাই রবিউল আওয়াল খান কিরন আওয়ামীগের প্রথম সংসদ সদস্য ছিলেন তাকেও সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে আজও তার হত্যার বিচার পাইনি আমরা।হারুন অর রশিদ খানের হত্যার করনে শিবপুরের মানুষ একজন অবিভাবক শূন্য হয়ে পরেছেন। হারুন অর রশিদ খান মৃত্যুর আগে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনকে বলেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান স্বজনেরা।

এখানে কমেন্ট করুন: