সোমবার রাতে ঢাকার রামপুরা এলাকায় চেকপোস্টে তরুণীর সঙ্গে পুলিশের বাদানুবাদের জেরে দুই পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। বাদানুবাদের ওই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।
ভিডিওতে ধারণা করা যাচ্ছে, বাদানুবাদের সময় কোনো একজন পুলিশ সদস্য ওই ভিডিওটি ধারণ করেছিলেন। কিন্তু এধরণের ভিডিও ধারণ ও তা প্রকাশ করা কতটা আইন সম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আইনজ্ঞরা মনে করছেন, কোনো নারী পুলিশের অনুপস্থিতিতে একজন নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার অনুমতি ছাড়াই সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করে আইনগতভাবে অপরাধ সংঘটন করেছেন ঐ নিরাপত্তা চৌকির পুলিশ সদস্যরা।
আইনজীবি তানজীব উল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ঐ নারীর সঙ্গে তিনটি অন্যায় করেছে পুলিশ। কোনো নারী পুলিশ সদস্য ছাড়া তাঁকে তল্লাশি করা, তল্লাশির সময় ঘটনার ভিডিও করা এবং ঐ ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা।
তানজীব উল আলমের মতে, আইন অনুযায়ী এরকম ক্ষেত্রে একজন সাধারণ নাগরিককে হয়রানির দায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরো পুলিশ বাহিনীর ওপর বর্তায়।

তবে ওই ঘটনায় এ এখনো কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয়নি। কিন্তু পুলিশ স্বপ্রনোগিত হয়ে বাহিনীর দুই সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল রানা।
পুলিশের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল রানা জানান, বিশেষ অভিযানের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে পুলিশ ঘটনার ভিডিও করে থাকে। অস্ত্র উদ্ধার, মাদক উদ্ধারের মত গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের ক্ষেত্রে পুলিশ সাধারণত ঘটনার ভিডিও করে যা পরবর্তীতে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে।
তবে সম্প্রতি আলোচনায় আসা ঘটনাটির ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্তকারী দল ভিডিও করার যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি বলে নিশ্চিত করেন।

পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও বলছেন, প্রমাণ রাখার স্বার্থে পুলিশের ভিডিও করার এখতিয়ার থাকলেও, অনুমতি ছাড়া সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা সন্দেহাতীতভাবে বেআইনি একটি কাজ।
জানা যায়, সোমবার রাত ২টার দিকে রামপুরা এলাকায় অটোরিকশা থামিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন পুলিশের একাধিক সদস্য। ওই তরুণী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়েও খারাপ মন্তব্য করেন পুলিশ সদস্যরা।

এখানে কমেন্ট করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *