নরসিংদীর পলাশে প্রায় ৩৫ বিঘা কৃষি জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে এক ইটভাটা মালিক। আর অবৈধ দখল থেকে পরিত্রানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকরা।
জেলার পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের গালিমপুর এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ঘটনাস্থল ঘুরে এসে জানা যায়, ডাংগা ইউনিয়নের গালিমপুর এলাকায় কৃষকদের সাথে বার্ষিক ১৯ হাজার টাকার বিনিময়ে ১০ বছরের জন্য চুক্তিতে একটি ইটভাটা তৈরী করেন আব্দুল হাই নামক এক ব্যক্তি। তার চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালে সেই চুক্তির ১০ বছর অতিক্রম শেষ করে। চুক্তি অনুযায়ী ১০ বছর পর কৃষকদের মাঝে তাদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু আব্দুল হাই চুক্তির পর তার ইটভাটার জমি কৃষকদের ফিরিয়ে না দিয়েই দুই বছর ধরে ভাটা বন্ধ রাখে। এই দুই বছর কৃষকদের জমিতে কোন প্রকার ফসলাদিও করতে দেওয়া হয়নি। এমন কি দুই বছরের জন্য কোন ভাড়াও প্রদান করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা।
এঅবস্থায় কৃষকরা তাদের জমি ফিরে পাওয়ার জন্য ভাটার মালিক আব্দুল হাই এর কাছে একাধিকবার দারস্ত হলেও তাদের উল্টো হুমকি ধামকি দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এঅবস্থায় কৃষকরা তাদের জমি থেকে ইটভাটা প্রত্যাহার করে তাদের জমি ফিয়ে পাওয়ার জন্য পলাশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, বার্ষিক ১৯ হাজার টাকার বিনিময়ে আমার ৩৫ শতাংশ জমি ১০ বছরের জন্য চুক্তি হয় আব্দুল হাই এর কাছে। চুক্তির ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও আজ দুই বছর ধরে সে কোনো ভাড়াও দিচ্ছেনা আবার জমিও ফিরিয়ে দিচ্ছেনা। তাই আমরা কৃষকরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রান চাই।
একই এলাকার অপর কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আমার ৫৩ শতাংশ জমিই আব্দুল হাইকে ১০ বছরের চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছি। এই সময় অতিক্রম হলেও সে জমি বুঝিয়ে দেয়নি। আর এর জন্য ভাড়াও দেয়নি। আমার জীবনের একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন এই জমির আয় থেকে বঞ্চিত হওয়ায় আমার খাওয়ার পয়সা নাই। যার ফলে আমি প্রায় মৃত্যু শয্যায়।
তাদের সুরে সুর মিলিয়ে এই এলাকার কৃষক আব্দুল সালাম, মামুন মিয়া, ফরমান আলীসহ প্রায় ৮/১০ জন কৃষক এই জানান, আমাদের জমির চুক্তির ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও আব্দুল হাই আমাদের জমি ফিরিয়ে দিচ্ছেনা। যার ফলে আমরা এই জমি থেকে কোন প্রকার আয় পাচ্ছিনা। এই অবস্থায় আমরা এই বিষয়টি থেকে পরিত্রানের জন্য প্রশাসনের দারস্ত হয়েছি।
অভিযুক্ত আব্দুল হাই বলেন, আমি ১০ বছরের চুক্তিতে ভাটা চালিয়েছি। তখন কৃষকদের কোন পাওনা আমার কাছে নেই। এর পর আমারই শ্যালক বাদল সরকারের কাছে ভাটা বিক্রি করে দিয়েছি সে ভাটা বন্ধ করে রেখে। এটা সম্পূর্ণ তার বিষয়। এটা আমার কোন বিষয় নয়।
পলাশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন নরসিংদী প্রতিদিনকে বলেন, এই বিষয়ে যতটুকু জানি সেটি হলো ডাংগার গালিমপুরের ইটভাটাটি ১০ বছরের জন্য আব্দুল হাই নামে এক ব্যক্তি চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তি শেষ হয়েছে ২ বছর হয়। এখন কৃষকরা তাদের জমি ফেরত পাওয়ার জন্য পরিষদের দারস্ত হয়েছে। তাই বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে।