মো. হৃদয় খান: নরসিংদীতে এখন ভোগান্তির আরেক নাম বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
নরসিংদীর দাশপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, পল্লী বিদ্যুতের লোকেরা এসে আগের মিটার বদলে নতুন প্রিপেইড মিটার লাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু লাগানোর পর প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ওইদিন রাত ৮ টার দিকে বাসায় কারেন্ট চলে যায়। মিটারে নাকি টাকা শেষ। পরে বিদ্যুৎ ছাড়াই ওইদিন রাত পার করে পরদিন সকালে গেলাম পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে। সেখানে গিয়ে দেখি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বিশাল লম্বা লাইন। দীর্ঘক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে ৩০০ টাকার টোকেন নিলাম। বাসায় এসে রিচার্জ করে দেখি আমার মিটারে আছে ২০৫ টাকা। ৯৫ টাকাই বিদ্যুৎ অফিস মিটার ভাড়া, ডিমান্ড চার্জ, ভ্যাট, ট্যাক্স এর নামে কেটে রেখেছে।
আজিজ বডিং এলাকার আবুল কাশেম জানান, বিদ্যুতের ৩০০ টাকার প্রি-পেইড কার্ড কিনলে ব্যবহার করা যায় ২০৫ টাকার বিদ্যুৎ আর ৫০০ টাকার কার্ড কিনলে মিলবে ৩৯৬ টাকার বিদ্যুৎ। ৩০০০ হাজার টাকার কার্ড কিনলে বিদ্যুৎ মিলে ২৭০০ টাকার। অফিস চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে প্রি-পেইড কার্ড কিনে আনতে হয় গ্রাহককে। আবার সেই গ্রাহককেই পরিশোধ করতে হয় সার্ভিস চার্জ।
একই এলাকার সাদ্দাম হোসেনের অভিযোগ, মিটার হলো বাড়ির মালিকের নামে। কিন্তু প্রতিমাসে রিচার্জ করতে গেলে ৪০ টাকা মিটার ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগে প্রতি মাসে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। প্রিপেইড মিটার চালু হওয়ার পর এখন ৮০০ টাকায় ১২ দিন যায়। পুরো মাস শেষ হতে আগের চেয়ে তিনগুণ বেশি বিল দিতে হয়। প্রতিমাসে ডিমান্ড চার্জ নামে একটা এমাউন্ট গ্রাহক পরিশোধ করতে হচ্ছে। পোস্ট পেইড বিলে এটিছিল নির্ধারিত। এখন প্রতি কিলোওয়াটে ডিমান্ড চার্জ পরিশোধ করতে হয়।
সামাদ মিয়া জানালেন- “নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে বিদ্যুৎ কিনতে আসি, তারপরও দেয়া লাগে সার্ভিস চার্জ। সার্ভিস চার্জ দিলাম ভালো কথা, কিন্তু আগেতো ব্যাংক বা মোবাইল দোকান থেকে বিল পরিশোধ করতাম। সময় কম লাগতো, টাইম সেভ হতো। এখন সময় খরচ করে ভাড়া দিয়ে এসেও লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হয়। যদি মোবাইলের কার্ডের মতো সিস্টেম হতো, তাহলে আমাদের ভোগান্তি হতো না। টাকার প্যারোতো ভাই আছেই। ৩ হাজার টাকার বিদ্যুৎ কিনলে পাই ২৭শ ২ টাকার বিদ্যুৎ।”
এসব বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।