নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি:
নরসিংদীর শিবপুরে ইউএনওর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, অর্থ আত্মসাতসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে শিবপুর পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে ব্যাপক সরকারী অর্থ লুটপাটের। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে ইউএনওর একক সিদান্তে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে এলাকায় বাড়িঘর বিলিনসহ ভূমি ধসের আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এসব অনাচার বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হুমায়ন কবিরের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপাতি, সাধারন সম্পাদকসহ ৯টি ইউনিয়নের সকল চেয়ারেম্যানবৃন্দ। একই সাথে সরকারের সুনাম রক্ষায় দুর্নীতিবাজ ইউএনওর বদলীর দাবি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে শিবপুর উপজেলা পরিষদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান। শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান বলেন, শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ন কবির একজন আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ।

তিনি ইউএনও পদের পাশাপাশি পৌরসভার প্রশাসক ও শিবপুরের সহকারী ভূমি কমিশনারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তাই প্রতিটি দপ্তরে তিনি নিজ ইচ্ছা মাফিক কাজ করেন। ঘুষ না দিলে কোন কাজ হয়না। এমনকি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের কাজ থেকেও তাকে ঘুষ দিতে হয়। অন্যথায় তিনি ফাইল আটকে রাখেন। উপজেলা চেয়ারেম্যান আরো বলেন, তিনি কোন রকম নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে ঘনবসতি এলাকা দুলালপুর ও মাছিমপুর ইউনিয়নে অবৈধ বালি উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছে। ইউএনওর নানা অনিয়ম এখন শিবপুরে উপেন সিক্রেট। ইউএনওর দুর্নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় জনগণ। তাই দুর্নীতিবাজ ইউএনওর বিরুদ্ধে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সামসুল আলম ভূইয়া রাখিল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাপসী রাবেয়া,ভাইস চেয়ারম্যান শরিফ ছারোয়ার ভূইয়া, মাসিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হারিস রিকাবদার, সাধারচর ইউপি চেয়ারম্যান মাসিউল গনি স্বপন, যোষর ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল আহাম্মেদ,জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম সরকার, আইয়ুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান সরকার,দুলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল হক মেরাজ,পুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার হাসানউল সানী এলিস আহাম্মেদ, বাঘাবো ইউপি চেয়ারম্যান তরুন মৃধা,চক্রধা ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান বেনজির আহাম্মেদ খান।

এর আগে শিবপুরে আদালতের আদেশ উপক্ষো করে ও টেন্ডার শর্তভঙ্গ করে স্থানীয় কলেজ গেইট বাজার থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল ইউএনও হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে। একই সাথে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করার ইউএনওর কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি কেন আদালত অবমাননার মামলা করা হবে না এই মর্মে ইউএনও হুমায়ন কবিরকে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল। এদিকে ঘুষ গ্রহণ, অর্থ আত্মসাৎসহ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: হুমায়ন কবির। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তথ্য নিভর হতে হবে। কোন প্রকল্পে অনিয়ম বা লোপাট হয়েছে সেটা বলতে হবে। ঢালাওভাবে অভিযোগ করলেতো হবে না। বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকালও ভ্রম্যামান অভিযান চালানো হয়েছে। ১৫টি মেশিন জব্দ করে ধংশ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সঠিকভাবে জনগণকে সেবা দিতে হরহামেসাই অফিস টাইমের বাইরেও কাজ করে থাকি। শিবপুরে রাজনৈতিক অস্থিরাতা আছে। এখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে কাজ করলে কোন কোন রাজনীতিবিদ নাখোস হয়। এমন হলে কাজ করা দায় হয়ে যাবে।

এখানে কমেন্ট করুন: