“রুখবো দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ” এই শ্লোগানকে ধারণ করে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় গণ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে, নরসিংদী জেলা ও রায়পুরা উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি এবং রায়পুরা উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন এর সভাপতিত্বে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে গণ শুনানি গ্রহণ করেন।
এসময় উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তাদের অভিযোগ উত্থাপন করেন। অপরদিকে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাগণ এই অভিযোগের জবাব দেন। এসময় রায়পুরা উপজেলার ভূমি বিষয়ের অভিযোগ সবচেয়ে বেশী উল্লেখ করেন প্রধান অতিথি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তাগণ কর্তৃক খারিজের নামে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থআদায়ের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে নরসিংদী জেলা প্রশাসক তাৎক্ষনিকভাবে ৩জন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। অভিযুক্তরা হলেন-আদিয়াবাদ ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা সাধন সূত্রধর, আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ও চাঁনপুর ইউনিয়নের তরুণ কুমার দাস।
এছাড়া রায়াপুরা থানা পুলিশের কনস্টেবল আমজাদ হোসেন কর্তৃক সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কা- ও স্থানীয় পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুদক সারা দেশেই কাজ করে যাচ্ছে। সমাজে এমন লোক অনেক আছেন, যারা বিনা পয়সায় সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই সমাজকে গড়তে আমরা সর্বস্তরে ভালো ও আলোকিত মানুষ চাই। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পুরণ হবে, সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।
দুদক কমিশনার বলেন, রায়পুরার মতো ভূমি ব্যবস্থাপনায় এতো অরাজকতা অন্য কোথাও দেখা যায়নি। তাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে প্রশাসন ও জনগণ একসাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।
এসময় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, দেশের সর্ব বৃহত্তর ২৪টি ইউনিয়ন নিয়ে রায়পুরা উপজেলা। এই উপজেলার একটি বিরাট অংশ চরাঞ্চল হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় কিছুটা সমস্যা রয়েছে। যার ফলে এই এলাকার উন্নয়ন তুলমনামূলক কিছুটা কম। এরমধ্যেই উপজেলার সীমিত সংখ্যাক কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে কার্যক্রম পরিচালতি হচ্ছে।
গণশুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক মো: আকতার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাকির হাসান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর সূর্য কান্ত দাস, সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, সকল ইউপি চেয়ারম্যানসহ ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।