অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের নামে থাকা ২৫টি বাড়ি-প্লট ও জমি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, এবি ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের নামে থাকা কয়েকটি অ্যাকাউন্ট এবং রুবিনার নামে থাকা ২০০০ সিসির ‘টয়োটা হ্যারিয়ার’ একটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। আদালতের আদেশ নিয়ে তাদের সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা ২৫টি বাড়ি-প্লটের মধ্যে ১৫টি ঢাকায়।
আবজাল হোসেন ১৯৯৫ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি আঞ্চলিক প্রকল্পে ‘অফিস সহকারী’ পদে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। পরে তিনি হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে অধিদপ্তরের মহাখালী এডুকেশন শাখায় কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী রুবিনা খানম একই অধিদপ্তরের আরেকটি প্রকল্পে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘স্টেনোগ্রাফার’ পদে দুই বছর চাকরি করে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। এরপর তিনি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নানা রকমের কাজ করতেন।
গত ১০ জানুয়ারি আবজালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়। দুর্নীতি বিষয়ে সত্যতা পাওয়ার পর আবজাল হোসেনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তাদের দুই লাখ ডলারে বাড়ি কেনার বিষয়টিও নিশ্চিত হয়।
আবজাল হোসেনের জব্দ করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার উত্তরার ১৫/সি নম্বর সেক্টরে তিন কাঠা জমির ২৪ নম্বর প্লট, উত্তরার ১৫/সি নম্বর সেক্টরে তিন কাঠা জমির ২৬ নম্বর প্লট, খিলক্ষেতে তিন কাঠা জমি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় চার কাঠার প্লট, মিরপুরে আড়াই কাঠা জমির ওপর টিনসেড বাড়ি, পল্লবীতে ছয় কাঠা জমি, ফরিদপুরের কোতোয়ালি পৌরসভা মৌজা এলাকায় সাড়ে ১০ শতাংশ জমিতে দোতলা বাড়ি, একই এলাকার রঘুনন্দনপুর মৌজায় সাড়ে ১৩ শতাংশ জমি, জেলার পশ্চিম টেপাখোলা এলাকায় ১১৩ শতাংশ জমি, রাজবাড়ী জেলার বসন্তপুর ইউনিয়নে ২৩০ শতাংশ জমি, খুলনা সিটি করপোরেশনের খালিশপুর বয়রা মৌজায় সাড়ে পাঁচ কাঠা জমি, একই সিটি করপোরেশনের মুজগুন্নি আবাসিক এলাকায় সাড়ে তিন কাঠা প্লট।
এছাড়াও দুদক রুবিনার নামে থাকা ঢাকার মিরপুরে একটি টিনসেড বাড়ি, পল্লবীতে আড়াই কাঠা জমি, বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের ৩০৬৭ নম্বর ব্লকে তিন কাঠার একটি প্লট, বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের ৩০৬৬ নম্বর ব্লকে তিন কাঠার একটি প্লট, ঢাকার কেরাণীগঞ্জের একটি মার্কেটে দোকান, রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে সাড়ে তিন কাঠা প্লটে ছয়তলা বাড়ি, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কে তিন কাঠা প্লটে ছয়তলা বাড়ি, ঢাকার সাভারে ১৫ শতাংশ জমি, ফরিদপুরের কোতোয়ালি পৌরসভার হাবেলী গোপালপুরে দোতলা বাড়ি, চর পশ্চিম টেপাখোলা এলাকায় আট শতাংশ জমি, একই এলাকায় আরেকটি নয় শতাংশ জমি, জেলার একই এলাকায় সাড়ে পাঁচ শতাংশের আরেকটি জমি জব্দ করা হয়েছে।