বরিশালে ঘুষ না দেয়ায় মোটরসাইকেল আরোহীকে মারধর করেছে পুলিশ। এতে উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্যকে পিটুনি দিয়েছেন। এ সময় ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল চালককে আটকের চেষ্টা করলে পুলিশের একটি টহল গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ সংলগ্ন চৌমাথায় এ ঘটনা ঘটে। জনতার পিটুনির শিকার ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা হলেন সার্জেন্ট হাসান আহম্মেদ ও কনস্টেবল ইব্রাহিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে নগরীর নবগ্রাম রোড থেকে বের হয়ে সিঅ্যান্ডবি রোড ধরে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন তামিম নামে এক ব্যক্তি।
এ সময় চৌমাথায় দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট হাসান আহম্মেদের নির্দেশে কনস্টেবল ইব্রাহিম তার গতিরোধ করে কাজগপত্র দেখতে চান। তামিম সব কাগজ দেখালেও মোটরযানের মালিকানা বদলের কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হন। তখন সার্জেন্ট হাসান মামলার ভয় দেখিয়ে কনস্টেবল ইব্রাহিমকে দিয়ে দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তামিম নিজেকে আওয়ামী লীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে ঘুষ দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসান তাকে অশ্নীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তামিম প্রতিবাদ করায় কনস্টেবল ইব্রাহিম তাকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের ওপর ফেলে দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। তখন মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গী প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করেন সার্জেন্ট হাসান।
বিষয়টি দেখে আশেপাশের ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে আটক করে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মহসিন টহল টেম্পু নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তিনি সার্জেন্টের পক্ষ নিয়ে তামিমকে থানায় নেয়ার চেষ্টা করলে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তামিমকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। তখন উপস্থিত লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের টহল গাড়িতে ভাঙচুর চালান। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহকারী কমিশনার রাসেল বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশের মারধরের শিকার তামিম বলেন, গাড়ির সব কাগজ থাকা সত্ত্বেও সার্জেন্ট হাসান আমার কাছে ঘুষ দাবি করেছেন। ঘুষ না দেয়ায় আমার মোটরসাইকেলকে মামলা দিয়েছেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হলে সার্জেন্ট হাসান ও কনস্টেবল ইব্রাহিম আমাকে মারধর করেছেন। তখন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আমাকে উদ্ধার করে এবং দুই পুলিশকে পিটুনি দেন।
তবে ঘটনাটি অস্বীকার করে সার্জেন্ট হাসান আহম্মেদ বলেন, মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে একটা বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরবর্তীতে বিষয়টি সেখানেই মীমাংসা হয়ে যায়।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, আমি সেখানে গিয়ে ট্রাফিক সার্জেন্টকে সরিয়ে নিই। মোটরসাইকেল আরোহীকে ছেড়ে দিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।