ভারতের চেন্নাই শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পুরাসাওয়ালকাম এলাকার এক এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে গত ৭ মাস ধরে ১২ বছর বয়সী স্কুলছাত্রীকে প্রতিদিনই ধর্ষণ করা হতো। এভাবে পর্যাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে ২২ জন। ৭ম শ্রেণীতে পড়া কিশোরী মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় ইনজেকশন দেয়া হত কিংবা মাদক মেশান সফট ড্রিংকস খাওয়ান হত। আর এসব ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে রাখা হয়েছিল। তারা মেয়েটিকে এই বলে হুমকি দিয়েছিল, ধর্ষণের কথা কাউকে বললে এসব ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হবে। ফলে ভীত শিশুটি পরিবারের কারো কাছে বলতে পারেনি এসব নির্যাতনের ঘটনা। মুখে বুজে সহ্য করে গেছে অমানবিক নিপীড়ন।

প্রতিদিন স্কুলভ্যান থেকে নামার পরই তাকে আটকাত লিফটম্যান রবি কুমার। তারপর কোনো খালি ফ্ল্যাট, ওয়াশরুম, ছাদ বা জিমে নিয়ে গিয়ে তার ওপর চালান হতে ধর্ষণ। গত শনিবার (১৪ জুলাই) পর্যন্ত এভাবেই চলছিল। সেদিন বাড়িতে বেড়াতে আসা কলেজ পড়ুয়া এক নিকটাত্মীয়ের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে শিশুটি। ওই আত্মীয় তার বাবা-মাকে পুরো ঘটনা জানালে পরদিনই তারা স্থানীয় এক থানায় অভিযোগ করেন।

গত রোববার মেয়েটি পুলিশকে জানায়, তাকে প্রথম ধর্ষণ করেছিল লিফটম্যান রবি কুমার (৬৬)। তিনদিন পর সে আরো দুইজন লোককে বাইরে থেকে নিয়ে আসে। তারা সবাই মিলে মেয়েটাকে ধর্ষণ করে। এরপর ধীরে ধীরে ধর্ষকদের দল ভারি হতে থাকে। সবমিলিয়ে ২২ জন মিলে মেয়েটিকে নিয়মিত ভোগ করতে থাকে। ওই আবাসিক ভবনের অনেক ফ্ল্যাট খালি পড়ে থাকায় মেয়েটির ওপর নির্যাতন চালাতে তাদের কোনোই সমস্যা হয়নি।

ইতিমধ্যে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে রোববার কিলপাউক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই অমানবিক ঘটনার সঙ্গে দারোয়ান, লিফটম্যান, ইলেকট্রিকমিস্ত্রী, গ্যাসমিস্ত্রী ও মালিসহ হাউজিংয়ের বিভিন্ন কর্মচারী জড়িত রয়েছে। এ ঘটনায় গত রোববার (১৫ জুলাই) সন্দেহভাজন ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকি চার অপরাধীকেও গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মেয়েটির বাবা দিনের বেশিরভাগ সময় নিজের কাজে বাড়ির বাইরে থাকেন। মা ব্যস্ত থাকেন ঘরের কাজে। কিন্তু মেয়েটির যে রোজ স্কুল থেকে ফিরতে দেরি হচ্ছে এদিকে কারোই নজর দেয়ার সময় মেলেনি। তার মা ভাবতেন, স্কুল ছুটির পর বন্ধুদের সঙ্গে খেলছে বলে মেয়ের বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে।

এখানে কমেন্ট করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *