নরসিংদীতে ২২ লাখ টাকা মূল্যের সিসাভর্তি ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম রিমন ও নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম একমি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই ছিনতাইয়ের সিসিটিভি ফুটেজ ও অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়।

এ ঘটনায় একটি প্রাইভেটকার, তিন মোটরসাইকেল ও সিসাভর্তি ট্রাক আলামত হিসেবে জব্দ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরই মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জুন ব্যবসায়ী মামুন সরকার নরসিংদীর চরহাজীপুর এলাকায় তাঁর প্রতিষ্ঠান থ্রি ব্রাদার্স ব্যাটারি সার্ভিস কর্নার থেকে ট্রাক দিয়ে আনুমানিক ২২ লাথ টাকা মূল্যের ৩৩১টি সিসা ও ৬৭ বস্তা গুড়াসিসা নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে সদর উপজেলার পুরানপাড়া এলাকায় একটি প্রাইভেট কার ও দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে সাত-আটজন তাঁদের গতিরোধ করে। পরে ব্যবসায়ী মামুন, ট্রাকচালক আসাদ মিয়া ও হেলপার অলিউল্লাহকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ট্রাক থেকে নামিয়ে প্রাইভেট কারে তুলে মারধর করা হয়। পরে সিসাভর্তি ট্রাক ও তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ঘোড়াদিয়া এলাকায় একটি কারখানার ভেতর। সেখানে নিয়ে ব্যবসায়ী মামুনের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এরই মধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পড়লে সিসাভর্তি ট্রাক, প্রাইভেট কার ও তিনটি মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী মামুন সরকার সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ প্রাইভেট কারের চালক রোমান মিয়া ও কারখানার দারোয়ান সোবহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। রোমান মিয়া ওই ঘটনায় অজানা এক বড় ভাই ছাড়াও ওয়াজেদ সরকার, রাসেল, রায়হান ও উৎপল নামের কয়েকজনের জড়িত থাকার কথা জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সৈয়দ রুহুল আমিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে অপহরণে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও তিনটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাইভেট কারের চালক রোমান মিয়া ও কারখানার দারোয়ান সোবহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোমান মিয়া আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে মোটরসাইকেলের মালিক ওয়াজেদ সরকার, আশিক ও মনির নামসহ অনেকের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। সেভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(ছিনতাইয়ের সিসিটিভি ফুটেজে জব্দকৃত বাইকসহ নরসিংদী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম একমি – সিসিটিভি ফুটেজটি দেখতে উপরের ছবিতে ক্লিক করুন।)

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপহরনের ঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজ ও কয়েকটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। এতে জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আহসানুল ইসলাম রিমন ও নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম একমির সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পর পরই অপহরণের ঘটনাটি রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজে অপহরণের সময় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল আলম একমির ছবি স্পষ্টত।

অভিযুক্ত রবিউল আলম একমির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আহসানুল ইসলাম রিমন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘একমি ঘটনার দিন পথচারী হিসেবে ওই রাস্তায় মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলো।’

তবে ওই মোটরসাইকেল থানায় জব্দ কেনো এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারে নি জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আহসানুল ইসলাম রিমন।

সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া অডিওক্লিপ –

এখানে কমেন্ট করুন: