মো.শফিকুল ইসলাম(মতি)নিউজ সময়:ভূমধ্যসাগরে নরসিংদীর ১৫ জনসহ ৩০ বাংলাদেশি নিখোঁজ শিরোনামে নিউজ সময়ে ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের একদিনের মধ্যে ইউরোপে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা শাখ (ডিবি) পুলিশ।সোমবার (৭ মার্চ) রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), নরসিংদী ও রায়পুরা থানা পুলিশ মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ এলাকার বাচ্চু মোল্লার ছেলে মামুন মোল্লা (৩৯) এবং একই উপজেলার আগানগর এলাকার কালীপদ শীলের ছেলে সুবল চন্দ্র শীলকে (৪৫) গ্রেফতার করে।পুলিশ জানায়, মনি চন্দ্র শীল (৩০)গত প্রায় ৫/৬ বছর যাবত লিবিয়া চাকরি করছিল।
এবং তারেক মোল্লা (৩০) ও মামুন মোল্লা (৩৯) উভয় নরসিংদীসহ তাদের নিকট আতœীয় স্বজনদের মাধ্যমে ইতালী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের নিকট থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করত। এরই ধারাবাহিকতায় তারা আশিষ সূত্র ধরকে (২১) বৈধ পথে ইতালী নেওয়ার কথা বলে ৮ লক্ষ টাকা মৌখিভাবে চুক্তি বদ্ধ হয় এবং বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তারেক মোল্লা ও মামুন মোল্লা (৩৯) দুইভাই মিলে আশিষ সূত্র ধরের বাড়ি থেকে ৬ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে।
বাকী ২ লক্ষ আশিষ সূত্র ধর ইতালী পৌছার পর তারেক মোল্লা আশিষ সূত্র ধরের পিতার নিকট থেকে নিবে বলে জানায়। একইভাবে ভিকটিম নাদিম সরকারের নিকট থেকে ৮,৫০,০০০ টাকায় মৌখিক চুক্তিবদ্ধ হয় এবং বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তারেক মেল্লা এবং মামুন মোল্লা ৬,৫০,০০০ টাকা নগদ গ্রহন করে। বাকী ২ লক্ষ টাকা ভিকটিম নাদিম সরকার ইতালী পৌছার পর তারেক মোল্লা গ্রহণ করবে মর্মে কথা হয়। একইভাবে ভিকটিম আলামিন ফরাজীর ভাই ইয়ামিনের নিকট থেকে ৮,৫০,০০০ টাকায় মৌখিক চুক্তিবদ্ধ হয় এবং বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ৬,৫০,০০০ টাকা নগদ গ্রহণ করে।
বাকী ২ লক্ষ টাকা ভিকটিম নাদিম সরকার ইতালী পৌছার পর তারেক মোল্লা গ্রহণ করবে মর্মে কথা হয়।গত ২৯/১১/২০২১ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার সময় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য তারেক মোল্লা আশিষ সূত্র ধরকে তার বাড়ি থেকে বুঝে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর এর উদ্দেশ্যে রওনা করে। পতিমধ্যে ঢাকার রামপুরা করোনা টেস্ট সম্পন্ন করে। গত ৩০/১১/২০২১১ তারিখ সকাল ৮টার সময় ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ইতালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরবর্তীতে আশিষ সূত্রধরকে বিবাদীরা ইতালী না পাঠিয়ে পরষ্পর যোগসাজসে প্রতারনা করে লিবিয়াতে প্রেরণ করে।
লিবিয়া পৌছানোর পর থেকে আশিষ লিবিয়া অবস্থান করতেছে বলে বিভিন্ন সময়ে তার বাবাকে মোবাইল ফোনে জানায়।সর্বশেষ গত ২৭/০১/২০২২ তারিখ সন্ধ্যার পর থেকে আশিষের সাথে তার বাবার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। ছেলের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে জানার জন্য তাদের জিজ্ঞসাবাদ করলে তার ছেলে ইতালী আছে বলে জানায় এবং অবশিষ্ঠ ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।
মানবপাচারকারীরা সংঘবদ্ধ ও পরষ্পর যোগসাজসে অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে তার ছেলেকে বৈধ পথে ইতালী না পাঠিয়ে লিবিয়াতে আটকে রেখেছে বা অন্যকোন দেশে পাচার করেছে। তারা প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের সক্রীয় সদস্য ও সংঘবদ্ধ চক্র।তারা ভিকটিম মো. আলামিন ফরাজী (৩০) এবং নাদিম সরকার (২২) রায়পুরা থানা এলাকার আরও একাধিক ভিকিটমকে বিভিন্ন সময়ে একই কায়দায় ইতালীর কথা বলে লিবিয়া বা অন্যকোন দেশে পাচার করেছে বলে জানা যায়।জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) নরসিংদী মানব পাচারকারী এই চক্রকে সনাক্ত করে এবং মানব পাচারের সাথে জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানা তিনি।