মো.শফিকুল ইসলাম(মতি)নিউজ সময়:নরসিংদীতে ২ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় এক ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাইয়ুম মিয়া নামের ওই ঠিকাদার মামলা করেন।এর আগে গত ২৪ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে শহরের বিলাসদী এলাকার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয়ে এই মারধরের ঘটনা ঘটে।মামলার বাদী প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার কাইয়ুম মিয়া নরসিংদীর শিবপুরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা।
তিনি শহরের ভেলানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত।মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেছেন, এলজিইডির একজন ঠিকাদার হিসেবে নিজের মালিকানাধীন মেসার্স জননী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের ঠিকাদারী করেন কাইয়ুম মিয়া। পাশাপাশি তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খায়রুল হাসান নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন হাসান এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমেও নরসিংদীতে ঠিকাদারী কাজ পরিচালনা করেন।গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ওই হাসান এন্টারপ্রাইজ আড়াই শতাংশ জামানতসহ শিডিউল জমা দিয়ে টেন্ডারে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২৩ মার্চ নির্ধারিত কাজের বিপরীতে সরকারি বিধি মোতাবেক ১০ শতাংশ হারে ৩০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি এলজিইডি কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়।এ সময় টেন্ডার সিডিউলের সঙ্গে জমা দেওয়া পে-অর্ডার একজন উচ্চমান সহকারীর কাছে ফেরত চাওয়া হলে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় পরদিন যেতে বলেন।এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবার ওই কার্যালয়ে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে পে-অর্ডার ফেরত চান মামলার বাদী।
এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান পে-অর্ডার ফেরত নিতে ২ লাখ চাঁদা দাবি করেন। ওই টাকা চাঁদা না দিলে ওই পে-অর্ডার বাজেয়াপ্ত করা হবে।বাদী দাবি করা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে খন্দকার আসাদুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে তার কক্ষে থাকা চেয়ার তুলে নিয়ে কাইয়ুমের মাথা বরাবর ছুড়ে মারেন। মাথায় না লাগলেও চেয়ারের আঘাত তার পিঠে ও হাতে লাগলে তিনি আহত হন।পরে কাইয়ুম মিয়া ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে সিড়ি দিয়ে নামার সময় খন্দকার আসাদুজ্জামান পেছন থেকে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে ফেলে দেন।
উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করেন। এ সময়ও মা-বাবাকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ করছিলেন খন্দকার আসাদুজ্জামান।ঠিকাদার কাইয়ুম বলেন, আমার সঙ্গে যা যা ঘটেছে তার সব প্রমাণ কার্যালয়টির সিসিটিভি ফুটেজে রেকর্ড আছে। খন্দকার আসাদুজ্জামান একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে আমাকে যেভাবে মারধর ও গালিগালাজ করেছেন, আমি এর বিচার চাই।তিনি আমাকে হুমকিও দিয়েছেন, তার কার্যালয়ে আবার যদি যাই তবে আমার জীবন শেষ করে দেবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান বলেন,আমার নামে কোনো একজন ঠিকাদার মামলা করেছেন, বিষয়টি এই প্রথম আপনার কাছে শুনলাম। কোনো ঠিকাদারকে আমি মারতে পারি, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? মামলার কাগজপত্র হাতে পেলে এই বিষয়ে বলতে পারবে।