নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির প্রথম সভায়ই অনুপস্থিত ছিলেন অধিকাংশ নেতা। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামের জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্মেলন কক্ষে সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন তাঁর বক্তব্যে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে তাঁর কর্মকান্ড নিয়ে তিরস্কার করেন।
এদিকে সভায় অনুপস্থিত নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন কোন জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ও দলীয় সাংসদ কিংবা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিল্পমন্ত্রী কারো সঙ্গেই সমন্বয় করেননি। দলীয় ও সাংগঠনিক কর্মকান্ড সভাপতির একক সেচ্ছাচারিতায় সম্পাদনের ক্ষোভে প্রথম সভাতেই ৭৫ সদস্যের মধ্যে ৪৪ জন অনুপস্থিত ছিলেন। সেই সাথে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নন এমন ও বহিরাগত লোক নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে জিএম তালেব হোসেন সভাপতি ও পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর গত ১৯ জানুয়ারি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটি অনুমোদনের পর জেলার সভাপতির নির্দেশে সাধারন সম্পাদক শনিবার কার্যকরী কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করেন। শনিবার কার্যকরী কমিটির প্রথম সভায় ৭৫ সদস্যের মধ্যে ৪৪ জন অনুপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে ১১ জন সহসভপতির মধ্যে ৬ জন অনুপস্থিত। ৩ জন যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের সবাই অনুপস্থিত। তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে দুজন অনুপস্থিত। এছাড়া আইন বিষয়ক সম্পাদক, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকসহ প্রায় ৪৫ জন অনুপস্থিত ছিলেন। এর আগে উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যকরী কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল নরসিংদী পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে। এবার কার্যকরী কমিটির প্রথম সভা কমিটির একজন সদস্যের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্মেলন কক্ষে নির্ধারন করায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির একক সেচ্ছাচারিতায় দলীয় সকল কর্মকান্ড পরিচালিত হওয়া, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংসদদের সঙ্গে সমন্বয় না করার অভিযোগ উঠে।
সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, দলের মধ্যে ঐক্য থাকলে সমস্যা কোথায়? দলীয় নমিনেশন যে পাবে সেই নির্বাচন করবে। দশটা হোন্ডা আর দশটা গুন্ডা দিয়ে সামনে-পিছনে এগিয়ে চলো এগুলোর তো কোন দরকার নেই।
তিনি সভাপতিকে তিরস্কার করে কমিটির সমালোচনা করে বলেন, কমিটিতে আবেদ আহম্মেদ ভাইয়ের মতো সিনিয়র নেতাকে সহসভাপতি রাখা হয়েছে। যিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভাইয়েরও সিনিয়র। ওনার তো উপদেষ্টা থাকার কথা। আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহেব কতগুলো মরা এনে, যেগুলোর নাম মানুষ নেয়ও না সেগুলোরে এনে উপদেষ্টা বানিয়েছেন। সভাপতি যে জাতীয় পার্টি করে এসেছেন মানুষ সেটা ঠিকই বলে। তিনি আবার বাকশালও করেছে। সবই করছি। আমরা কিন্তু কোন ধানাই-পানাই না। একটাই করছি। বঙ্গবন্ধু আদর্শে ছিলাম। আজকে যে জেলা আওয়ামী লীগ কমিটি সেটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোন আলোচনা করা হয়নি। তিনি তার মন মতো করেছেন। সম্মেলনের আগে প্রতিদিন আমার এখানে গিয়ে বসেছিলেন। পরে আর খবর নাই।