মো: সফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী:নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পাইকান গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শিখা বেগম (৪০) নামের এক নারীর শ্লীলতাহানীসহ তার ছেলে সাইফুল ও তরিকুলের উপর হামলা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা একই এলাকার বাদল মিয়ার স্ত্রী ও সন্তান। বাদল মিয়ার পিতা জীবদ্দশায় পাইকান বাজার সংলগ্ন জমিটির ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে ভোগ দখলে ছিল। ১৮ জুলাই রোববার নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এসে এবিষয়ে জানান ভুক্তভোগী বাদল মিয়া ও তার স্ত্রী শিখা বেগম।
পরে প্রতারণার মাধ্যমে আরএস রেকর্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করে চাচাত ভাই চাঁন মিয়ার পিতা ইছামুদ্দি। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পক্ষের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে মামলাসহ একাধিক মামলা চলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় মহামাণ্য হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন নং-৩৫৪৮/২০২২ইং মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এবিষয়ে একাধিক মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে নি:স্ব আজ বাদল মিয়া। অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করছে। মহামাণ্য হাইকোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকলেও এই বিরোধপূর্ণ জমি ভোগ দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চাঁন মিয়া ও তার অলিওয়ারিশরা। এদিকে আইনী সেবা পাওয়ার আশায় মামলা করায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন বাদল মিয়ার স্ত্রীসহ তার ছেলে সাইফুল ও তরিকুল। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ওই ভুক্তভোগীর নিজ বসত বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী মনোহরদী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি থানা পুলিশ। উল্টো বাদল মিয়াসহ তার পরিবারের সদস্যদের আটক করার জন্য প্রতিদিন বাড়ি-ঘরে হানা দিচ্ছে পুলিশ। বর্তমানে পুলিশের ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বাদল মিয়া ও তার পরিবার-পরিজন। অভিযুক্তরা হচ্ছে- মনোহরদী উপজেলার পাইকান এলাকার চাঁন মিয়ার পুত্র লিটন মিয়া (৪৫), ইছাম উদ্দিনের পুত্র নুরু মিয়া (৫৫) ও চাঁন মিয়া (৭২), রতন মিয়ার পুত্র সুমন মিয়া (৪০)সহ আরো অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন।
ভুক্তভোগী শিখা বেগম তার লিখিত অভিযোগে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমার ও আমার পরিবারের লোকজনের সাথে অভিযুক্তগণের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে আমার বসত বাড়ী সংলগ্ন দক্ষিণ পাশের্^র পাকা সড়কে চলাচলকালে দেশীয় অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে দলবদ্ধভাবে হামলা চালায় তারা। এসময় চাঁন মিয়ার উস্কানীতে এলোপাতারি হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করে শিখা বেগম ও তার দুই ছেলেকে। একপর্যায়ে নুরু মিয়া তাকে মাথার চুল ও পরিহিত জামা-কাপড় ধরে টানা-হেচ্রাকালে শ্লীলতাহানীসহ গলায় পরিহিত এক ভরি ওজনের স্বর্ণের একটি চেইন নিয়ে যায় তারা। যার বাজারমূল্য আঁশি হাজার টাকা।
পরে আমাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন দ্রæত ঘটনাস্থলে এসে তাদের কবল হইতে হাড়-ভাঙ্গা গুরুতর কাটা রক্তাক্ত ও নীলাফুলা জখমী অবস্থায় মা এবং ছেলেদের উদ্ধারকালে এবিষয়ে মামলা করলে সুযোগ বুঝে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে প্রকাশ্যে হুমকী দিয়ে বীরদর্পে চলে যায় তারা। পরে ঘটনার সংবাদ পেয়ে জামাতা রফিক মিয়া ঘটনাস্থলে এসে ঘন ঘন বমিসহ আশঙ্কাজনক অবস্থায় দেখে দ্রæত মনোহরদী উপজেলা ও কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করে শিখা ও তার ছেলেকে। এবিষয়ে থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় শিখা বগেম বাদী হয়ে নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি সিআর মোকাদ্দমা দায়ের করে। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ প্রদান করে।
এ বিষয়ে মনোহরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: ফরিদ উদ্দিন এর মুঠোফোনে ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া প্রয়োজন।
##