মো.শফিকুল ইসলাম মতি,নরসিংদী:নরসিংদী জেলা ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কার্যকরী সভাপতির বিরুদ্ধে সংগঠনের ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার (৯ আগস্ট) নরসিংদীর অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে এ মামলা করেন সংগঠনের চার বারের নির্বাচিত সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।
নরসিংদী জজ কোর্টের আইনজীবী মনসুর আলী শিকদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, নরসিংদী জেলা ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়ন নামের সংগঠনটি ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে। সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। সংগঠনের সদস্যদের ভর্তি ফি বাবদ জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে মোট ৬০ লাখ টাকা এবং প্রতি ৩ বছরান্তে ১ হাজার টাকা করে সদস্য নবায়ন ফি বাবদ চার মেয়াদে মোট এক কোটি ২০ লাখ টাকা আদায় করা হয় ।
তাছাড়া ২০১৮ সালে মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন থেকে শ্রমিক কল্যাণের জন্য অনুদান হিসেবে পাওয়া যায় আরও ২০ লাখ টাকা। শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন সময়ে আদায় করা আরও এক কোটি টাকাসহ মোট ৩ কোটি টাকা সংগঠনের ফান্ডে জমা থাকার কথা থাকলেও সেই টাকা আত্মসাৎ করায় বর্তমানে সংগঠনে কোন টাকা নেই। সংগঠনের সভাপতি মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কার্যকরী সভাপতির গচ্ছিত এই টাকার হিসাব চাইলে তারা বিভিন্ন সময় তালবাহানা করতে থাকেন। এই জেরে পরবর্তী সময়ে তাকে খুন ও গুমের বিভিন্ন হুমকি দেয়া তারা।
সংগঠনের সভাপতি অর্থ আত্মসাতে জড়িতদের স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপে বাধা হয়ে দাঁড়ালে তারা দলবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র করে সংগঠনের সভাপতিকে অবৈধভাবে বরখাস্ত করেন। যা সংগঠন পরিপন্থী। তাছাড়া সংগঠনের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে তাদের পরিবারের তার মৃত্যুভাতা হিসেবে এক লাখ টাকা প্রদান করা কথা থাকলেও বিগত পাঁচ বছরে একজন সদস্যের মৃত্যু ভাতা প্রদান করা হয়নি।
এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার লক্ষে সরকার সংগঠনের যে জমি অধিগ্রহণ করেছে তার পাওনা অর্থও আত্মসাতের পায়তারা করছে অর্থ আত্মসাতে জড়িতরা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মনসুর আলী শিকদার বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থে সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে উপস্থিত হয়ে অর্থ আত্মসাতে জড়িত জেলা ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধা (৫০), কোষাধ্যক্ষ মো. সুলতান (৪৫), কার্যকরী সভাপতি খোরশেদ আলম তাবিজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন (৪৫)সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। যার নম্বর নরসিংদী সি, আর মামলা নং ৯৩৫/২০২৩ইং।
আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বাদীর ভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।