স্টাফ রিপোটার: সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লা এই প্রভাবে হয়েছেন শিবপুর থানা যুবলীগের সভাপতি আর ভাই ও দলের পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে নরসিংদীতে সরকারি দপ্তরগুলোর টেন্ডারের কাজ বাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিবপুর থানা যুবলীগের সভাপতি তাজুল মোল্লা।
নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। ঢাকার অভিজাত এলাকায় তার রয়েছে একাধিক বিলাস বহুল বাড়ী, ফ্ল্যাট ও প্লট। শিবপুর বাজনাব হাস্কুলের পাশে তার রয়েছে ৪ বিঘা জমি,পালপাড়া রোডে ঈদগাহের পাশে ৩ বিঘা, গাংপার মসজিদের পাশে ৩ বিঘা,সৈয়দ নগর বাসস্ট্রেন্ডের নিকটে ৭ বিঘা,বাজনাব এলাকায় ২০ বিঘা,ঢাকা উত্তরায় ৬ তলা বিলাস বহুল ভবন,পূর্বাঞ্চলে রয়েছে একাধিক প্লট। ভাই এমপি হিসেবে শিবপুর থানা যুবলীগের সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন তিনি।
মহাক্ষমতাধর আলোচিত এই যুবলীগ নেতা ৫ আগস্টের ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর লাপাত্তা ভাই সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লাহসহ নিজেও লাপাত্তা হওয়ায় তাদের কথা এখন শিবপুরসহ পুরো জেলায় মানুষের মুখে মুখে। শিবপুর পালপাড়া বাজারে বাবা বোতলে কেরাসিন তৈল বিক্রি করতেন আর তিন ভাই বাঁশ আর খরকুটা বিক্রি করতেন একই বাজারে। তখন তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও সাবেক মস্ত্রীর সাথে সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লার পরিবারের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই পরিবারের সদস্যদের।
আর সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লার প্রভাব আর নিজে শিবপুর থানা যুবলীগের সভাপতি এর প্রভাব খাটিয়ে এলজিইডি টেন্ডারের কাজ চলত যুবলীগ নেতা তাজুল মোল্লার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা টেন্ডার কমিটির কথায়। প্রত্যেকবার টেন্ডারে ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকার ওপরে বিটমানি উঠত। এক পর্যায়ে এ নিয়ে এলজিইডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী বেকে বসলে তার ওপর তাজুল মোল্লার নেতৃত্বে হামলা চালায় এক ঠিকাদার, আর এ নিয়ে নির্বাহীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে বসেন ঐ ঠিকাদার, পরে নিজেই মামলা প্রত্যাহার করেন ঠিকাদার। এভাবে প্রতি বছর শুধু টেন্ডার কমিটির নামেই কোটি টাকা হাতিয়ে নেন যুবলীগ নেতা তাজুল মোল্লা অভিযোগ এলাকাবাসীর। শিবপুর উপজেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে নামমাত্র খাদ্য ও পথ্য সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।ভাই এমপি হওয়ার জোরে তিনি চাকরি বাণিজ্যও করেন। এভাবে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার আর শিবপুর থানা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করে টেন্ডার বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্য ও বিভিন্ন দালালি করে তাজুল মোল্লা নিজেই হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় শত কোটি টাকা।
এক সময়ে বাঁশ ও খরকুটা বিক্রেতা কিছু না থাকলেও এখন তার সবই আছে। ঢাকার উত্তরায় ৬ তালা ভবনসহ বিভিন্ন ফ্যাট প্লট,বিঘার বিঘা জমি। আর তারই বন্ধু এ পিএস কালামের নামেও রয়েছে ঢাকাতে একাদিক ফ্ল্যাট, প্লট। তাজুল মোল্লার ঘনিষ্টদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভাই সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লার কাঁধে ভর দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া তাজুল মোল্লা। ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শত কোটি টাকার মালিক তাজুল মোল্লা শুধু না, শিবপুর থেকে তার ভাই সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লা লাপাত্তা হয়ে গেলে আর তার চ্যালাচামটা সবাই এখন লাপাত্তা।
সাবেক এমপি সিরাজ মোল্লা গা ঢাকা দেওয়ার পরই তাজুল মোল্লাকে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ডাল-পালা মেলতে শুরু করে। অনেকেই আবার এত সম্পদ অর্জনের উৎস খুঁজে দেখারও দাবি জানিয়েছেন। এসব বিষয়ে কথা বলতে তাজুল মোল্লার সঙ্গে গত কয়েক দিন ধরে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের ব্যাপারে খোঁজ নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।