মো. হৃদয় খান: নরসিংদী রায়পুরায় ৭ বছরের শিশু মামুন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যায় জড়িত মূল আসামি নাসিরকে (২২) গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যার পরিকল্পনায় ছিলেন সুজন মিয়ার জেঠাতো ভাই জয়নাল মাস্টার। তিনি তাঁর ছেলে আরমান, নাতি জিদান আর ভাড়া করা সন্ত্রাসী নাসির এর মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করেন। আর হত্যাকাণ্ড বাস্তাবায়ন করেত কিলারের সাথে দশ হাজার টাকা রফাদখা হয়। আজ দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউর রহমান, ডিবি পুলিশের ওসি গোলাম মোস্তফা, এস আই আব্দুল গাফফার সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন জানায়, গত ২০ জুন বিকেলে রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর এলাকার সুজন মিয়ার ছোট ছেলে মামুন মিয়া বাড়ির সামনের খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে দফায় দফায় বিভিন্ন কৌশলে তার পরিবারের নিকট মুক্তিপণ বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। এরই মধ্যে নিখোঁজের ৩ দিন পর প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের তিন তলা বাড়ির ছাদ থেকে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় শিশু মামুনের অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত ভার থানা থেকে ডিবি পুলিশের এস আই আব্দুল গাফফারের কাছে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় প্রথমে হত্যায় জড়িত সন্দেহে জয়নাল মাষ্টারকে আটক করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত মূল আসামী নাসিরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাসির হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। একই সাথে হত্যার নেপথ্যের বিষয়ে বিবরণ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল গাফফার পিপিএম বলেন, অভিযুক্ত জয়নাল মাস্টার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। সে মূলত কোনো এজেন্সির হয়ে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করে। নিহত মামুনের বাবা সুজন মিয়াকে জয়নাল মাস্টারই সৌদি আরবে পাঠিয়েছিল। এমনকি সুজন মিয়াও বিদেশ থেকে সব টাকা-পয়সা সুজন মিয়ার মাধ্যমেই দেশে পাঠিয়েছে। সুজন মিয়া দেশে ফিরে সব টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখে। সেই টাকার লোভেই নিজের ছেলে আরমান এবং নাতি নরসিংদী মডেল কলেজের শিক্ষার্থী জিদান ও লিমনকে দিয়ে নাসিরকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে অপহরণ করা হয় শিশু মামুনকে। নাসিরের মাধ্যমে সুজনের ফোনে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে জয়নাল মাস্টারের পরিকল্পনামাফিক শিশু মামুনকে দুই দিন অভুক্ত রেখে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে পরিকল্পনামাফিক নিজের বাড়ির ছাদে লাশ এনে ফেলে রাখেন জয়নাল, যাতে কেউ তাঁকে সন্দেহ করতে না পারে।