নরসিংদীর শিবপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপস্থিতি দেখে উপজেলা মাসিক সমন্বয় পরিষদের সভা বর্জন করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এই সমন্বয় সভায় ১৫ সদস্যের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলেও বাকি ১৩ জন অংশ নেননি।
একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৭টিতেই আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান, বাকি দু’টিতে বিএনপির। বর্তমান স্বতন্ত্র নির্বাচিত সংসদ সদস্য (কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য) সিরাজুল ইসলাম মোল্লা পদাধিকার বলে উপজেলা মাসিক সমন্বয় পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা। এই কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা ১৫ জন।
ইউপি চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করে বলেন, স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এছাড়া বিগত দিনগুলোতে টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে না দেওয়ায় চেয়ারম্যানরা বিক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। সংসদ সদস্য তার নিজস্ব লোকদের দিয়ে এসব বরাদ্দ খরচ করছেন।
জয়নগরের ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম সরকার বলেন, ‘দলীয় চেয়ারম্যান হয়েও আড়াই বছরে সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা সাহেবের কাছ থেকে টিআর, কাবিখার মতো কোনও উন্নয়ন বরাদ্দ পাইনি। তিনি নিজস্ব লোক আর আওয়ামী লীগের বাইরের লোকদের দিয়ে কাজ করান। আমাদের ইউনিয়নে কোনও কাজ করতে এলেও তিনি আমাদের ডাকেন না। আজকের বর্জনের মাধ্যমে এর নীরব প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীলু রায় বলেন, ‘সভার প্রধান উপদেষ্টা, সভাপতিসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন কিন্তু কোনও ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন না।’ পরবর্তীতে এই সভা আবার হবে জানিয়ে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘সভার সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং মিটিং ডেকেছেন ইউএনও। তারপরেও ইউপি চেয়ারম্যানরা কেন অংশ নিলেন না, এই প্রশ্ন আমারও। আমি তো মাত্র উপদেষ্টা। শুনেছি, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়নের জন্য কোনও উন্নয়ন বরাদ্দ আমার কাছে নেই, আছে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে। তারপরও যদি কিছু চাওয়ার থাকে তবে চেয়ারম্যানরা আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন। আর আমার নিজের কোনও লোক নেই, আমি শিবপুরের জনগণকে নিয়েই কাজ করছি।’